বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাত পোহালেই পঞ্চমী। এক বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মর্ত্যে বাপের বাড়িতে এসেছেন উমা (Durga Puja 2025)। আগামী পাঁচটা দিন চুটিয়ে আনন্দ করার অপেক্ষায় রয়েছে আপামর বাঙালি। শহরের বিভিন্ন নামীদামী পুজো কমিটিতে থিমের পুজো হোক বা সাবেকি বারোয়ারি পুজো কিংবা বনেদি বাড়ির পুজো (Durga Puja 2025), বঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রূপে পূজিত হন মা দুর্গা।
উঁইঢিবিকে পুজো করা হয় দেবী দুর্গা (Durga Puja 2025) রূপে
অনেক জায়গায় দেবীর বাহন সিংহকে ঘোটকমুখী রূপেও দেখা যায়। আবার কোথাও কোথাও স্বামী মহাদেবকে সঙ্গে করেও নিয়ে আসেন উমা। তবে এই বাংলাতেই এমন এক জায়গা রয়েছে যেখানে কোনও প্রতিমা বা ঘট নয়, বরং দেবী দুর্গা (Durga Puja 2025) রূপে পুজো করা হয় উঁইঢিবিকে!
কী কাহিনি রয়েছে নেপথ্যে: হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে এমন ভাবেই দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025) হয়ে আসছে আসানসোলের ঊষাগ্রাম সংলগ্ন নিউ ঘুসিক গ্রামের হাজরা পরিবারে। এখানে মা দুর্গা কোনও মৃন্ময়ী মূর্তি নয়, বরং এক বিরাট উঁইঢিবি। তবে এর নেপথ্যে রয়েছে এক আশ্চর্য কাহিনি যা শুনলে গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য। শোনা যায়, বহু বছর আগে দুর্গা প্রতিমাকেই পুজো (Durga Puja 2025) করা হত এই বাড়িতে। একবার প্রতিমার পেছনে রাখা ধূপ প্রদীপের শিখা থেকে প্রতিমার চুলে আগুন লেগে যায়। আগুন নেভানো গেলেও খুঁত রয়ে যায়।
আরও পড়ুন : মা দুর্গা পূজিত হন মা চামুণ্ডা রূপে, কী এই সন্ধিপুজো? ঠিক কোন সময়েই বা করতে হয়?
দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে পুজো: ওই ঘটনার পর থেকেই মূর্তি পুজো বন্ধ করে ঘটপুজো শুরু হয় হাজরা পরিবারে। শোনা যায়, পরবর্তীতে পুজোর (Durga Puja 2025) ভার দিবাকর হাজরার কাঁধে এসে পড়ায় একদিন তিনি দেখতে পান দুর্গামন্দিরের চাতালে রয়েছে এক উঁইঢিবি। কয়েকদিনের মধ্যে সেই ঢিবি আকারে আরও বেড়ে উঠতে দিবাকর হাজরা সিদ্ধান্ত নেন, ভেঙে ফেলবেন সেই ঢিবি। এরপরেই নাকি স্বয়ং দেবী তাঁকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, ওই উঁইঢিবিকেই পুজো (Durga Puja 2025) করতে। উপরন্তু ওই ঘটনার পরেই মূল ঢিবির পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং গণেশের আদলে আরও ঢিবি তৈরি হয় বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন : পুজোর মুখে বিষন্ন টেলিপাড়া, গল্প ফুরোলো জলসার প্রাক্তন বেঙ্গল টপার মেগার
তারপর থেকেই উঁইঢিবিকে কাপড় পরিয়ে দুর্গা রূপে পুজো করা শুরু করে হাজরা পরিবার। সমস্ত আচার নিয়ম কানুন মেনেই হয় পুজো। উঁইঢিবির সামনে বসানো হয় ঘট। কাপড় এবং বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় দোলা যাতে করে নবপত্রিকা নিয়ে আসা হয়। অষ্টমীতে ছাগবলি হয়, দশমীতে ঘট বিসর্জন দেওয়ার প্রথা রয়েছে হাজরা পরিবারে।