বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের (India) পাশে দাঁড়িয়ে কড়া বার্তা দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার মস্কোয় আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি আমেরিকার উদ্দেশে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনওভাবেই ভারত কোনও অপমান মেনে নেবে না। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার কোনওদিন কোনও অশান্তি হয়নি। আমি জানি, ভারত অপমান সহ্য করবে না। বাইরের দেশ যতই চাপ দিক না কেন, ভারত মাথা নোয়াবে না।” তাঁর বক্তব্যে বারবার উঠে আসে ভারতের প্রতি আস্থার প্রকাশ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা।
ভারতেরm(India) পাশে থাকার আশ্বাস রাশিয়ার:
পুতিন জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করেন এবং এমন কোনও পদক্ষেপ মোদি করবেন না যা ভারতের (India) মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে। তাঁর মতে, ভারত বরাবর স্বাধীন নীতি গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতেও একইভাবে চলবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়টি। আমেরিকা ও ইউরোপের চাপ সত্ত্বেও ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল কিনছে। পুতিন বলেন, “ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে বছরে অন্তত ৯০০ থেকে ১০০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হবে। ভারতীয় জনগণ খুব ভালো করে বুঝতে পারবেন দেশের নেতারা তাঁদের জন্য কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।”
আরও পড়ুন: মনের জেদ! ৪৫ বছরে ব্যবসা শুরু করে আজ লক্ষ লক্ষ টাকার উপার্জন, চমকে দেবে এই প্রৌঢ়ার কাহিনি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন আমেরিকার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে আমেরিকা যদি বাণিজ্য যুদ্ধ জারি রাখে, তবে শেষ পর্যন্ত তার মার পড়বে আমেরিকার অর্থনীতির উপরই। তিনি মনে করিয়ে দেন, একদিকে মার্কিন শুল্কনীতি ভারতীয় অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, অন্যদিকে রাশিয়া ভারতের ক্ষতি পূরণে আরও কৃষিপণ্য ও ওষুধ আমদানির পরিকল্পনা করছে। তাঁর ভাষায়, “আমরা ভারতকে (India) কখনও অপমানিত হতে দেব না। বরং ভারতের কৃষিপণ্য এবং ওষুধ কেনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও মজবুত করব।”
এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন ডিসেম্বরে পুতিনের ভারত সফর নির্ধারিত হয়েছে। সেসময় তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শুল্কযুদ্ধ’-এর প্রেক্ষাপটে পুতিন-মোদির বৈঠক কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে ভারতের (India) পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে সরাসরি বার্তা দেওয়া পুতিনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে নতুন তাৎপর্য সৃষ্টি করেছে।
স্পষ্টতই, মার্কিন চাপের মুখে ভারতকে (India) সমর্থন জানিয়ে রাশিয়া প্রমাণ করল, নয়াদিল্লির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত এবং রাজনৈতিক স্তরেও দৃঢ়। পুতিনের কথায়, ভারতকে অপমান করা মানে একপ্রকার রাশিয়ার বন্ধুত্বকেও চ্যালেঞ্জ জানানো। এই বার্তা যে কূটনৈতিক দিক থেকে আমেরিকাকে অস্বস্তিতে ফেলবে, তা বলাই বাহুল্য।