চিন–পাক যুদ্ধবিমানে রুশ ইঞ্জিন? আদৌ সত্যি নাকি পুরোটাই বিভ্রান্তি? মুখ খুলল রাশিয়া

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: এবার পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানে থাকবে রুশ (Russia) ইঞ্জিন? চিনের তৈরি যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের ভরসার প্রতীক। কিন্তু সম্প্রতি খবর ছড়ায়, এই যুদ্ধবিমানের শক্তি আরও বাড়াতে নাকি পাকিস্তান রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। বলা হয়, চিনের তৈরি জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক-৩ যুদ্ধবিমানে রাশিয়ার আরডি-৯৩এমএ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই চমকে ওঠে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ, রাশিয়া বরাবরই ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সেই দেশই যদি পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করে, তবে তা নিঃসন্দেহে নয়াদিল্লির কাছে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানে রুশ ইঞ্জিন? (Russia)

তবে এই বিভ্রান্তি দূর করতে সরাসরি মুখ খুলেছে মস্কো। রাশিয়ার (Russia) সরকারি মহল জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন বিক্রির কোনও চুক্তিই হয়নি। মস্কোর প্রতিনিধিদের কথায়, “পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার এতটাও বন্ধুত্ব নেই, যা ভারতের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।” অর্থাৎ, ভারত–রাশিয়া সম্পর্কের স্থায়িত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে কোনও পরিবর্তন ঘটেনি, এমনটাই স্পষ্ট করেছে পুতিন প্রশাসন।

আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে নয়া চাল? পাকিস্তানের জন্য বাংলাদেশের দরজা খুলে দিলেন ইউনূস

উল্লেখ্য, রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বহু পুরনো ও গভীর। ভারতের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে রাশিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। ‘সুদর্শন চক্র’ নামে পরিচিত এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে রাশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপহার। পাশাপাশি ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বিশ্বের অন্যতম মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ব্রহ্মস’। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নামকরণেই প্রতিফলিত হয়েছে দুই দেশের বন্ধুত্ব—ভারতের ব্রহ্মপুত্র ও রাশিয়ার মস্কোভা নদীর সংযোগে ‘ব্রহ্মস’।শুধু প্রতিরক্ষা নয়, জ্বালানি খাতেও রাশিয়া ভারতের অন্যতম বড় অংশীদার। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মাঝেও ভারত নিয়মিত রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল আমদানি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি সত্ত্বেও ভারত–রাশিয়া সম্পর্ক ক্রমেই আরও মজবুত হচ্ছে। ফলে পাকিস্তান নিয়ে ওঠা গুঞ্জন রাশিয়ার জন্য কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর ছিল, যা মস্কো দ্রুত স্পষ্ট করে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার (Russia) এই বিবৃতি ভারতের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে ভারত–রাশিয়ার সম্পর্ক বরাবরই কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান ও চিনের ঘনিষ্ঠতা বরাবরই নয়াদিল্লির নজরে ছিল। এই অবস্থায় রাশিয়ার পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে কোনও সামরিক সাহায্য দেওয়ার খবর আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তুললেও, মস্কোর পরিষ্কার অস্বীকার সেই জল্পনায় পুরোপুরি জল ঢেলে দিয়েছে।

Is Russia giving fighter jet engine to Pakistan?

আরও পড়ুন: বিগত ৭ বছরে কতটা বেড়েছে ভারতীয়দের বেতন! রিপোর্টে মিলল অবাক করা তথ্য

চিন–পাকিস্তান মৈত্রী আরও দৃঢ় হওয়ার সময়েই রাশিয়ার (Russia) এই অবস্থান ভারতের সঙ্গে তার ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের প্রমাণ দিচ্ছে। তাই যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ নিয়ে যতই বিতর্ক ছড়াক, আপাতত ভারত নিশ্চিত থাকতে পারে—রাশিয়া তার পাশে আগের মতোই অটল।