বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মিরিকের দুধিয়ায় মঙ্গলবার পৌঁছে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাহাড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ধসের পর রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন ১৫ দিনের মধ্যেই দুধিয়ায় একটি নতুন সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে।
১৫ দিনের মধ্যে অস্থায়ী সেতু তৈরি করার প্রতিশ্রুতি মমতার (Mamata Banerjee)
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানান, প্রথমে আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন সেতুটি তৈরি করতে এক মাস সময় লাগবে। কিন্তু বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হবে। এর পাশাপাশি আগামী বর্ষার আগে স্থায়ী সেতু তৈরির কাজও সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিন দুর্গত পরিবারদের উদ্দেশে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “যাঁদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলি আমরা পুনর্নির্মাণ করব।” এর জন্য দার্জিলিঙের জেলাশাসককে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, যাঁরা নিজেদের ঘরে ফিরতে পারছেন না, তাঁদের জন্য কমিউনিটি কিচেন চালু রাখতে হবে। যাঁদের নথিপত্র হারিয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য বিশেষ ক্যাম্প চালানো হবে। আধার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, স্কুলের বই, সবকিছুর পুনর্ব্যবস্থা করা হবে সেই ক্যাম্প থেকে।
মঙ্গলবার দুধিয়ায় স্বজনহারা ১৬টি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন নিজে। বলেন, “জীবন চলে গেলে আর কিছুই করার থাকে না, কিন্তু যে পরিবারে কেউ বেঁচে আছেন তাঁদের দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের।” এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে বলেন মৃতদের পরিবারের একজনকে এক মাসের মধ্যে স্পেশ্যাল হোমগার্ড হিসেবে চাকরি দেওয়া হবে। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা উচ্চতার শর্তে বিশেষ ছাড় থাকবে।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান, দুধিয়ায় বিকল্প সেতুর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সেই সেতু তৈরি করতে এক বছর সময় লাগবে। তবে আপাতত মানুষ যাতে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারেন, তার জন্যই ১৫ দিনের মধ্যে একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে। এছাড়া তিনিআরও বলেন, “নেপাল এবং ভূটানেরও কিছু দেহ আমাদের এলাকায় এসেছে। আমরা তাদের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সসম্মানে সেই দেহগুলি ফেরত পাঠানো হবে।”
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। শস্যবিমার আওতায় তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জানান তিনি। এদিন মানুষকে শান্ত থাকার বার্তা দেন মমতা। তিনি বলেন, “রাগ করলে কোনও লাভ হয় না। উসকানিতে কেউ পা দেবেন না। খারাপ সময় ঠান্ডা মাথায় সামাল দিতে হয়।” উল্লেখ্য, সোমবারই নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ আক্রান্ত হন। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বি কুল, শান্ত থাকো।””
আরও পড়ুনঃ ‘বন্যা সামলাবে না গ্রেফতার করবে?’ নাগরাকাটায় খগেন মুর্মুর উপর হামলায় ঘটনায় ‘সাফাই’ কল্যাণের
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। মমতা নির্দেশ দেন, রোহিণীর ভেঙে যাওয়া রাস্তা দ্রুত মেরামত করতে হবে। এছাড়া তিনি জানান, “উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থা অনেকটা নৌকার মতো। নেপাল, সিকিম বা ভূটানে বৃষ্টি হলেই জলের ধারা বাংলায় আসে।” এরজন্য তাই আগাম প্রস্তুতি রাখার বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।