বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর হামলার প্রতিবাদে ত্রিপুরায় তৃণমূল পার্টি অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগে ফের উত্তপ্ত রাজনীতি। বিজেপির মিছিল থেকে হামলার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, যার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে দেখা যায়, তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চলছে, অথচ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ নিঃশব্দ দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে এবার নড়েচড়ে বসলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
বিজেপির বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। দলের দাবি, ত্রিপুরার শাসক দল বিজেপি এই কাজ করেছে। এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পোস্ট করে বলেছে, “এই হামলা প্রমাণ করে, বিজেপি-র রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরোধীদের ভয় দেখানো এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা।”
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এই ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী করেছে বিজেপিকে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “বাংলায় ভোটে পরাজিত হয়ে বিজেপি এখন অন্য রাজ্যে হিংসার রাজনীতি ছড়াচ্ছে। পুলিশের সামনেই বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।”
‘পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে ছিল’ অভিযোগ অভিষেকের (Abhishek Banerjee)
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) পোস্ট করা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, হামলার সময় উপস্থিত পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তৃণমূল সাংসদের দাবি, “এই ঘটনা একক নয়। গত কয়েক বছরে বারবার ত্রিপুরায় আমাদের দলীয় কর্মীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ২০২১ সালে আমার সফরের সময়ও কনভয়ে হামলা করেছিল ওরা।”
এই ঘটনার পরই বুধবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ত্রিপুরায় পাঠানো হচ্ছে। দলের বক্তব্য, এই প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে এবং বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্য প্রশাসনের কাছে তুলবে। তৃণমূল জানিয়েছে, “ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী প্রতিটি নাগরিক এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে লড়ছে। ত্রিপুরার মানুষ যেমন দেখছে, গোটা দেশও তা দেখছে।”
অন্যদিকে, নাগরাকাটা হামলার ঘটনায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গুন্ডাদের আশ্রয়দাতা। তাই ত্রাণ দিতে গিয়ে সাংসদ-বিধায়ক আক্রান্ত হলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এই কারণেই এনআইএ তদন্ত প্রয়োজন।”
ত্রিপুরায় তৃণমূল অফিস ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে দুই রাজ্যের রাজনীতি আরও একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ক্ষোভ, অন্যদিকে বিজেপির পাল্টা অভিযোগে রাজনৈতিক সংঘাতের আঁচ এবার রাজ্য সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছে।