বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নাগরাকাটায় আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে দেখতে মঙ্গলবার শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন, আহত সাংসদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর নিয়েই শুরু হল নতুন বিতর্ক। একই হাসপাতালে ভর্তি বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh) অভিযোগ করে বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ছিল “নোংরা রাজনৈতিক নাটক”।
‘আমি অনুমতি দিইনি’, জানান শঙ্কর (Shankar Ghosh)
শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh) জানান, তাঁকেও দেখতে যেতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি নিজে সেই অনুমতি দেননি। সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, “সকালে হাসপাতাল প্রশাসন আমাকে স্বল্প নোটিসে জানায় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে দেখতে আসতে চান। আমি অনুমতি দিইনি।” তিনি আরও বলেন যে, “সাংসদ খগেন মুর্মু যেহেতু আইসিইউ-তে রয়েছেন এবং কথা বলতে অক্ষম, তাই তাঁর সম্মতির প্রশ্নই ওঠে না।”
মুখ্যমন্ত্রী খগেন মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেছেন সেই ছবি ও ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই আরও তীব্র কটাক্ষ করেছেন শঙ্কর (Shankar Ghosh)। শঙ্কর বলেন, “তিনি খগেন মুর্মুর সঙ্গে এক মিনিট দেড় মিনিটেরও কম সময় কাটিয়েছেন। এই সময় তাঁর মিডিয়া টিম ছবি তুলেছে ও ভিডিয়ো করেছে প্রচারের উদ্দেশ্যে। খগেন মুর্মু কথা বলার অবস্থায় নেই, তাই কোনও কথোপকথনই হয়নি।” এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়কের তির্যক মন্তব্য করে বলেন, “এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোংরা ও কুৎসিত রাজনীতির আরেকটি উদাহরণ।” শঙ্করের (Shankar Ghosh) দাবি, আহত সাংসদকে দেখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও রাজনৈতিক লাভ হবে না। “বিজেপি বাংলার মানুষের পাশে থাকবে,” বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার নাগরাকাটার বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিক্ষোভকারীদের চড়-ঘুষিতে গুরুতর জখম হন খগেন। মুখ ও চোখ থেকে গলগল করে রক্ত বেরোতে দেখা যায়। শঙ্কর ঘোষকেও ধাক্কা ও ঘুষি মারার চেষ্টা হয়।
আরও পড়ুনঃ নাগরাকাটা ইস্যুতে শুভেন্দু বনাম মমতা! কনভয় বিতর্কে তীব্র রাজনৈতিক তরজা উত্তরবঙ্গে
ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে রাজ্য রাজনীতি। নাগরাকাটা কাণ্ডের নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার আহত সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে (Shankar Ghosh) দেখতে হাসপাতালে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “লোকসভার স্পিকার রাজ্য সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছেন। রিপোর্ট দিতে দেরি হলে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, এই হামলার ঘটনায় NIA তদন্তের দাবি জানিয়েছে। রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, “ঘটনার এত ঘণ্টা পরেও কেন কাউকে গ্রেপ্তার করা হল না?”