বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোটার তালিকা নিবিড় সমীক্ষার বা SIR নিয়ে ফের উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সময়মতো শেষ না হলে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা না এলে নির্বাচনও আটকে যাবে?
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, “চূড়ান্ত ভোটার তালিকা বেরোনোর পরে যেকোনও দিন নির্বাচন ঘোষণা হতে পারে। বিধানসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ভোট না হলে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে।” শুভেন্দুর বক্তব্য অনুযায়ী, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ বা SIR যদি সময় মতো শেষ না হয়, তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোট সম্ভব নয়। শুভেন্দু বলেন, “বিহারের মডেল অনুযায়ী SIR সম্পূর্ণ সংশোধনের কাজ। ড্রাফট ভোটার লিস্ট বেরোনোর পর ১৫ দিন আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকে, তার একমাস পরে চূড়ান্ত লিস্ট প্রকাশিত হয়।”
মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুললেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)
বিরোধী নেতা (Suvendu Adhikari) অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। শুভেন্দু দাবি করেন, “মমতার মন্তব্যে মাঠপর্যায়ের বিএলও-দের কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি হামলার মুখেও পড়তে পারেন তাঁরা।” শুভেন্দু বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের আইডি কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ওপর হামলা হয়, তবে তার দায় সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ করেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার SIR-এর আড়ালে NRC চালু করতে চাইছে। এই বক্তব্যকেই বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করে শুভেন্দু বলেন, “এই ধরনের মন্তব্যই প্রশাসনিক কাজের ওপর প্রভাব ফেলছে।”
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) এদিন আরও বলেন, “গোটা ভারতে ভোটার বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ১০৫টি বিধানসভা আসনে এই হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। হিন্দুদের সংখ্যা কমেছে, সংখ্যালঘুদের কিছু অংশের সংখ্যা বেড়েছে।’’ তাঁর দাবি, মূলত সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেই ভোটার বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, যেমন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার।এছাড়া রাজারহাট-নিউটাউনে বৃদ্ধি ২৮ শতাংশ, জলঙ্গিতে ৩০ শতাংশ। এছাড়া শুভেন্দু জানান, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীরা CAA-তে নাম তুললে তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে না।”
আরও পড়ুনঃ কালীপুজোর পরেই শুরু SIR? কোলাঘাটে বৈঠকে বড় ইঙ্গিত দিল নির্বাচন কমিশন
উল্লেখ্য, এদিন বিধাননগরে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ভূপেন্দ্র যাদব ও বিপ্লব দেব। বৈঠকে প্রবেশের আগে বিপ্লব দেব জানান, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, SIR প্রক্রিয়া এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়েই আলোচনা হবে। নাগরাকাটায় হামলার ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। অন্যদিকে, শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের ত্রিপুরা সফরকে মানুষ মনে রাখবে। নাগরাকাটা হামলার জবাব ভোটেই দেবে বাংলার মানুষ।”