বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চলতি অর্থবর্ষে বাজার থেকে ঋণ তোলার নির্ধারিত লক্ষ্য প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার। অর্থ দপ্তরের শীর্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই বাজেটে নির্ধারিত মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ তুলে ফেলবে রাজ্য।
তিন মাসে তুলবে ২৯ হাজার কোটি টাকা
সূত্রের খবর, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই তিন মাসে রাজ্য সরকার বাজার থেকে ২৯,০০০ কোটি টাকা তুলবে। এর মধ্যে ডিসেম্বরেই তুলবে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা। নভেম্বরে তোলা হবে ১১,০০০ কোটি, আর অক্টোবরে ৩,০০০ কোটি টাকা। এর আগেই, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য তুলেছে প্রায় ৪৯,০০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ডিসেম্বর পর্যন্ত বাকি ২৯,০০০ কোটি তোলা গেলে, চলতি অর্থবর্ষে মোট ঋণ হবে প্রায় ৭৮,০০০ কোটি টাকা, যা বাজেট নির্ধারিত লক্ষ্য ৮১,৯৭২ কোটি টাকার ৯৫ শতাংশ।
এই গতিতে এগোলে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে রাজ্যের হাতে ঋণ তোলার সুযোগ থাকবে মাত্র ৪,০০০ কোটি টাকার মতো। তবে, যদি রাজ্য চায়, FRBM Act-এর (Fiscal Responsibility and Budget Management Act) নিয়ম মেনে বাড়তি ঋণ তোলাও সম্ভব হতে পারে। এই আইনে বলা আছে, রাজ্যের মোট ঋণ রাজ্যের জিএসডিপি-র নির্দিষ্ট শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
বাজেট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ শেষে রাজ্যের মোট ঋণ দাঁড়াবে প্রায় ৭.৭২ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ সালে যা ছিল ৬.৩০ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে ঋণ বাড়বে প্রায় ৯ শতাংশ। ২০১০ সালে, বামফ্রন্ট সরকারের সময় রাজ্যের মোট ঋণ ছিল মাত্র ১.৯০ লক্ষ কোটি টাকা। এখন সেই অঙ্ক বেড়ে চার গুণেরও বেশি।
আরও পড়ুনঃ স্ক্যানারে সুজিত বসুর ছেলেও? ‘পুর দুর্নীতি’র তদন্তে ফুল অ্যাকশনে ইডি
চলতি বাজেটে ঋণ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২,৭৩২ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজ্যের ঋণ বাড়া এখন প্রায় অনিবার্য। একজন অর্থনীতিবিদের ভাষায়, “যখন সামাজিক প্রকল্পে খরচ বাড়ছে, অথচ রাজস্ব আয় বাড়ানোর পথ নেই, তখন রাজ্যের অর্থনীতি ভারসাম্য রাখা খুবই কঠিন হয়ে যায়।”ডিসেম্বরের মধ্যেই বার্ষিক ঋণ তোলার খাতা বন্ধ করতে চলেছে রাজ্য, আর সেই নিয়েই নতুন করে প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে।