বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজো মিটতেই পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর অবশেষে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Bose) সল্টলেকের অফিস থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বেরোলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর আধিকারিকরা। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান শেষ হয় শনিবার ভোররাতে। শুধু মন্ত্রীর অফিসই নয়, একসঙ্গে ১০টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি।
দমকলমন্ত্রীর (Sujit Bose) অফিসে ২০ ঘণ্টার হানা ইডির
১০ অক্টোবর সকালে হঠাৎই ইডি আধিকারিকরা ঢুকে পড়েন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Bose) সল্টলেকের অফিসে। সকাল থেকে টানা চলে খোঁজাখুঁজি, জিজ্ঞাসাবাদ, নথি যাচাই। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত গড়ালেও বের হননি তদন্তকারীরা। অবশেষে প্রায় ২০ ঘণ্টা পর, রাত দেড়টা নাগাদ অফিস থেকে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে।
ছেলের ধাবায় ২২ ঘণ্টার তল্লাশি
একই সঙ্গে ইডি অভিযান চালায় সুজিত বসুর (Sujit Bose) ছেলের রেস্তোরাঁয়ও। বাইপাস সংলগ্ন সেই ধাবায় প্রায় ২২ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। ভোর রাতে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রেস্তোরাঁয় যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালা হয়েছে, তার উৎস জানতেই এই অভিযান। ইডি খতিয়ে দেখছে, সেই টাকা আসলে এসেছে কোথা থেকে।
শুধু সুজিত বসু (Sujit Bose) নন, তাঁর ঘনিষ্ঠদের দিকেও নজর ছিল তদন্তকারীদের। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত, যিনি সুজিত বসুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, তাঁর বাড়ি ও গোডাউনেও তল্লাশি চালায় ইডি। সেই সঙ্গে মন্ত্রীর চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের দপ্তরেও হানা দেওয়া হয়। তদন্তকারীদের অনুমান, পুর নিয়োগ দুর্নীতির অর্থের স্রোত এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে।
এই দীর্ঘ তল্লাশি অভিযানের পর মুখ খুলেছেন দমকলমন্ত্রী (Sujit Bose) নিজেই। তাঁর বক্তব্য, “সবাই জানে এটা প্রেসার পলিটিক্স। নির্বাচন যত এগোবে, এই ধরনের অভিযান তত বাড়বে। ভয় পেয়ে পালিয়ে যাব না। এটা ভোটের রাজনীতি। অফিসে ঢুকে এমনও হতে পারে যে আমাদের কাগজের মধ্যে অন্য কাগজ ঢুকিয়ে দিল। আমরা আইনি পথে ব্যবস্থা নেব।”
ইডির এই অভিযানে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, “এত বড় দুর্গাপুজো, নিজের জন্মদিনে মুম্বই থেকে শিল্পী এনে অনুষ্ঠান, এত টাকা কোথা থেকে এল? জনগণকে জবাব দিতে হবে।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের কটাক্ষ, “একটা সময় ওঁর একটা রোলের দোকান ছিল। এখন কম করে ১০ হাজার কোটি টাকার মালিক। এদের গ্রেপ্তার করে তদন্ত করা উচিত।”
আরও পড়ুনঃ ৭৮ হাজার কোটি ঋণ! ডিসেম্বরেই বার্ষিক লক্ষ্য ছুঁবে রাজ্য
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেও সুজিত বসুর (Sujit Bose) বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। সেবার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল তাঁর মোবাইল ফোন। প্রায় দুই বছর পর ফের নতুন করে তদন্তে উঠে এলেন মন্ত্রী। দুর্গাপুজো শেষ হতেই পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের কোমর বেঁধেছে ইডি।