অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলে জেলও হতে পারে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে চাপে মুখ্যসচিব?

Published on:

Published on:

Election Commission Questions Chief Secretary After Mamata’s SIR Remarks

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ SIR প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য রাখেন, তাতে কমিশনের নির্দেশিকা এবং প্রশাসনিক প্রোটোকল ভঙ্গ হয়েছে কিনা, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। কমিশনের অভ্যন্তরীণ সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব কীভাবে সেই মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন, তা নিয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকার ও কমিশনকে (Election Commission)। তাঁর অভিযোগ, “SIR-এর নামে আদপে NRC চালু করার চক্রান্ত চলছে।” এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও কটাক্ষ করে তাঁকে ‘মীরজাফর’ বলে উল্লেখ করেন।”

একইসঙ্গে তিনি কমিশনের (Election Commission) বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “যিনি রাজ্য থেকে গিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সময় হলে বলব। আশা করি তিনি বেড়ে খেলবেন না, কারণ উনি বড্ড অফিসারদের থ্রেট করছেন। অথচ নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ।” এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়।

ফলকনামা ছাড়া কোন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যায় না বলে দাবি কমিশনের (Election Commission)

নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে প্রশাসনিক শালীনতা প্রশ্নের মুখে। কমিশন মনে করছে, লোকপাল আইনের ২০ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে হলফনামা ছাড়া কোনও সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যায় না। মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছরের জেলও হতে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলছেন, তখন মুখ্যসচিবের উপস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।

এই ঘটনার পরই সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তাতে মনে হয় তিনি কমিশনকে হুমকি দিচ্ছেন। আমরা জানতে চাই মনোজ আগারওয়ালের বিরুদ্ধে কী তথ্য আছে। কোন আধিকারিককে কীভাবে তিনি ধমকেছেন, তাঁর নাম প্রকাশ করুন।” তিনি আরও বলেন যে, “এই আধিকারিক কে? বিএলও, বিডিও, ম্যাজিস্ট্রেট না এসডিও? জনগণ জানতে চায়, মুখ্যমন্ত্রী কার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন।”

Election Commission Questions Chief Secretary After Mamata’s SIR Remarks

আরও পড়ুনঃ বন্যা-ভূমিধস পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গ, প্রতিটি পদক্ষেপে নজর রাখছেন মমতা, জানাল নবান্ন

যদিও এই অভিযোগের ভিত্তিতে শাসক দলের তরফে কেউ এখনও সরকারি প্রতিক্রিয়া না দিলেও, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন এই ঘটনা মুখ্যসচিব ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়েও নতুন বিতর্ক উসকে দিতে পারে। কমিশনের (Election Commission) তরফে ইতিমধ্যেই নবান্নে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এখন দেখার, মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না, অথবা মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন কিনা।