বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলের পাঠ্যক্রমে যুক্ত হতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI)। শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, দেশের স্কুলগুলিতে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই এআই শেখানো বাধ্যতামূলক হবে। এই সিদ্ধান্তকে ভারতের স্কুল শিক্ষায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, স্কুল শিক্ষায় এআই (AI) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি বিস্তারিত কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে, যাতে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক উভয়ই প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।
CBSE বিভিন্ন গ্রেডে এআই (AI) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাঠামো তৈরি করছে
স্কুল শিক্ষা সচিব সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, “আমাদের দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে, যাতে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা এই প্রযুক্তির সঙ্গে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “সারা দেশে এক কোটিরও বেশি শিক্ষকের কাছে পৌঁছনো এবং তাদের এআই শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ।” সঞ্জয় কুমার আরও জানান, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) বিভিন্ন গ্রেডের জন্য এআই (AI) অন্তর্ভুক্তির একটি কাঠামো তৈরি করছে। ইতিমধ্যেই শিক্ষকদের পাঠ পরিকল্পনায় এআই টুলস ব্যবহারের জন্য একটি পাইলট প্রোজেক্ট শুরু হয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণিতেও শুরু হচ্ছে এআই (AI) শিক্ষা
বর্তমানে প্রায় ১৮,০০০-এরও বেশি CBSE অনুমোদিত স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১৫ ঘণ্টার একটি মডিউলের মাধ্যমে এআই (AI) একটি দক্ষতাভিত্তিক বিষয় হিসেবে শেখানো হয়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে এটি ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবার তৃতীয় শ্রেণি থেকে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত করা হচ্ছে এআই, যা ভারতের স্কুল শিক্ষাব্যবস্থায় এক বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ছোট ক্লাস থেকেই শিক্ষার্থীরা যাতে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করতে পারে এটাই উদ্দেশ্য সরকারের।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আগেই বলা হয়েছে, এআই (AI) এর যুগে কর্মসংস্থানের প্রকৃতি দ্রুত বদলাবে। অনুমান অনুযায়ী, প্রায় ২০ লক্ষ ঐতিহ্যবাহী চাকরি হারিয়ে যেতে পারে, তবে সঠিক ইকোসিস্টেম তৈরি হলে ৮০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই প্রসঙ্গে নীতি আয়োগও বলেছে, ভারতের অর্থনীতিতে এআই-এর (AI) ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে সরকার, শিল্পক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত নেতৃত্ব ও ধারাবাহিক সহযোগিতার উপর।
আরও পড়ুনঃ SIR প্রক্রিয়ায় ERO নিয়োগে বেনিয়ম? মুখ্যসচিবকে চিঠি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতের এআই (AI) একটি গ্লোবাল পাওয়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। তাই এআই কে সময়মতো বাস্তবায়ন না করে হলে ভারত তার কর্মশক্তিকে সুরক্ষিত করতে পারবে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে ডিজিটাল যুগের এই রূপান্তর শুধু স্কুল শিক্ষায় নতুন দিক খুলবে না, বরং ভারতের প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতির ভিত্তিকেও আরও শক্ত করবে।