বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP)-এর জেলা সভাপতি পদে একাধিক নতুন মুখ ঘোষণা করল দল। কোথাও পুরনোদের জায়গা অটুট, কোথাও বা পরিবর্তন। কিন্তু সবচেয়ে নজর কেড়েছে দক্ষিণ কলকাতার নতুন সভাপতি হিসেবে বিতর্কিত ছাত্রনেতা সাব্বির আলির নাম। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের এই যুবনেতা দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন, তবুও দলের ভরসা এবার তাঁর উপরেই।
সরস্বতী পুজো বিতর্কে যেভাবে শিরোনামে এসেছিলেন সাব্বির (TMCP)
চলতি বছর সরস্বতী পুজো ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই প্রাক্তন কলেজ, যোগেশচন্দ্র ল’ কলেজে। অভিযোগ, পুজো করার বিরোধিতা করে ছাত্রনেতা সাব্বির আলি নাকি এক ছাত্রকে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেন। এই ঘটনায় চারু মার্কেট থানায় তাঁর বিরুদ্ধে FIR দায়ের হয়।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পুজো বিতর্কের পর প্রকাশ্যে আসে সাব্বিরের আরও কিছু অভিযোগ। কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় নিজে জানান, সাব্বিরের ভয়েই তিনি নিয়মিত কলেজে যেতেন না, এমনকি একাধিকবার হেনস্থার মুখে পড়েছেন তিনি। এই সমস্ত বিতর্ক সত্ত্বেও দক্ষিণ কলকাতার TMCP সভাপতি হিসেবে সাব্বির আলির নাম ঘোষণায় বিস্মিত রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে বিতর্কই হারাল সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস দাসকে। মাস কয়েক আগে কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশের নাগরিক নিউটন দাসের নাম উঠে আসায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। তখনই সামনে আসে দেবাশিসের নাম। অভিযোগ, ওই বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তাঁর। এই বিতর্কের জেরেই দল (TMCP) এবার তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে। তাঁর জায়গায় সুন্দরবনের নতুন সভাপতি হলেন প্রীতম হালদার।
বিতর্কিতদের উপরে ভরসা কেন?
দলের একাংশের মতে, ছাত্র সংগঠনের (TMCP) ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবই মুখ্য। সাব্বিরের প্রভাব দক্ষিণ কলকাতার কলেজ মহলে প্রবল, সেই কারণেই দলের আস্থা তাঁর উপর। তবে বিরোধীদের কটাক্ষ, “তৃণমূলে যোগ্যতার থেকে এখন বিতর্কই বড় যোগ্যতা!”
আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুর ধর্ষণকাণ্ডে পুলিশের ওপর অনাস্থা, আরজি করের তুলনা টেনে CBI তদন্তের দাবি নির্যাতিতার বাবার
এই রদবদলকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। একদিকে পুরনো বিতর্কের পরও সাব্বিরের উন্নতি, অন্যদিকে বিতর্কেই দল থেকে দেবাশিসের ছিটকে পড়ার এই দুই বিপরীত চিত্র যেন একসঙ্গেই তুলে ধরেছে বর্তমান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সাংগঠনিক রূপরেখা।