বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দার্জিলিঙের ম্যালের বিখ্যাত মহাকাল মন্দির পুজো দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছেন যে, সমতলেও একটি মহাকাল মন্দির তৈরি করতে চান তিনি। এর জন্য তিনি শিলিগুড়ি ও তার আশপাশে ইতিমধ্যেই সেই মন্দিরের জন্য উপযুক্ত জমি খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
ভোটের আগে নতুন পদক্ষেপ মমতার (Mamata Banerjee)
বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার, যা অনেকের কাছেই ছিল মমতার (Mamata Banerjee) একপ্রকার মাস্টারস্ট্রোক। এবার উত্তরবঙ্গে মহাকাল মন্দির গড়ার পরিকল্পনাও তেমনি মাস্টারস্ট্রোক মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপাতত পরিকল্পনার পর্যায়ে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে এই প্রকল্প। তবে মমতার এই ঘোষণা ঘিরে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে, কে এই ‘মহাকাল’? অনেকেরই সাধারণ ধারণা, মহাকাল মানেই শিব, কিন্তু মহাকাল রূপের গভীর অর্থ অনেকটাই অজানা।
কে এই মহাকাল?
মহাকালেশ্বর হলেন দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের তৃতীয় লিঙ্গ, যা হিন্দু দেবতা শিবের এক জ্যোতির্ময় রূপ। এই মন্দির অবস্থিত মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে, রুদ্র সাগরের তীরে। এখানে শিবলিঙ্গকে স্বয়ম্ভু বা স্বয়ং শিবের সাক্ষাৎ-মূর্তি হিসেবে পূজা করা হয়। শিবপুরাণের মতে, প্রাচীন অবন্তিকা নগরে শাসক ছিলেন চন্দ্রসেন শিবের একনিষ্ঠ উপাসক। তাঁর রাজ্য আক্রমণ করে শত্রুরা, অসুর দূষণের সাহায্যে। তখনই অসহায় ভক্তদের ডাকে সাড়া দিয়ে শিব ‘মহাকাল’ রূপে আবির্ভূত হন ও শত্রুদলকে ধ্বংস করেন। ভক্তদের অনুরোধে তিনি সেখানে চিরকাল অবস্থান করেন ‘মহাকালেশ্বর’ রূপে।
এই রূপে শিব সময়, সৃষ্টি ও ধ্বংসের প্রতীক। তিনিই জীবনের চক্রের নিয়ন্তা, যিনি মৃত্যু ও পুনর্জন্মের উপর প্রভুত্ব রাখেন। মহাকালেশ্বরের শিবলিঙ্গ দক্ষিণমুখী, তাই তাঁকে ‘দক্ষিণামূর্তি’ বলা হয়। এটি একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ, যেখানে তান্ত্রিক শিবনেত্র প্রথা দেখা যায়। মন্দিরে থাকা নাগচন্দ্রেশ্বর মূর্তি কেবল নাগপঞ্চমীর দিনই জনসমক্ষে দর্শনের জন্য খোলা হয়।
আরও পড়ুনঃ বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ! কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান তুলে দেবেন মেসি
উল্লেখ্য, বুধবার থেকেই উত্তরবঙ্গের বিধ্বস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। ত্রাণ বিতরণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলার পর বৃহস্পতিবার সকালে দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে নতুন এই উদ্যোগের ঘোষণা করেন তিনি। তবে প্রশ্ন উঠছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়েও যেমন নিয়ম ও আচার নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল, তেমন কি এবারও হবে? অনেকেই দিঘার মন্দিরকে ‘ধাম’ বলা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন, এমনকি অহিন্দুদের প্রবেশ নিয়েও কটাক্ষ হয়েছিল। এখন নতুন মহাকাল মন্দির নিয়েও রাজনৈতিক তর্জা কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।