বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফ্রান্সের তৈরি ৩০০ রফলের মধ্যে ৩৬ টি রয়েছে ভারতেই (India)। ফ্রান্সের তৈরি দাসো অ্যাভিয়েশনের রাফাল যুদ্ধবিমান আজ বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও উন্নত ফাইটার জেট হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ গবেষণা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা মেনে তৈরি এই বিমান আজ এক ঐতিহাসিক মাইলস্টোন ছুঁয়েছে। ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, তারা এখনও পর্যন্ত মোট ৩০০টি রাফাল ফাইটার জেট তৈরি করেছে। সংখ্যাটি শুধু উৎপাদনের নয়, বরং রাফালের অপারেশনাল এবং বাণিজ্যিক সাফল্যের প্রতীক বলেই মনে করছে সংস্থাটি।
ভারতে (India) ফ্রান্সের তৈরি রাফাল:
ফরাসি প্রতিরক্ষা দফতর বা ‘ডিরেকশন জেনারাল দে ল’আরমামঁ’-এর তত্ত্বাবধানে চলা এই কর্মসূচিতে যুক্ত রয়েছে প্রায় ৪০০টি ফরাসি সংস্থা। অর্থাৎ, রাফালের সাফল্য কেবল ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা শক্তিরই নয়, বরং দেশের শিল্প ও প্রযুক্তি খাতেরও সাফল্যের প্রতিফলন। দাসো অ্যাভিয়েশন জানায়, রাফাল শুধুমাত্র ফ্রান্সের সামরিক সার্বভৌমত্বের প্রতীক নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও এটি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার নিদর্শন। সেই রাফাল ভারতের (India) সামরিক বাহিনীকেই শক্তি যোগায়।
আরও পড়ুন: তৈরি হল নয়া ইতিহাস! টেলিকম পরিষেবায় বিশ্বের শীর্ষ ৩ দেশের মধ্যে শামিল ভারত
বর্তমানে ফ্রান্স ও ভারত সহ (India) বিশ্বের ৯টি দেশ রাফাল যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৫৩৩টি রাফালের অর্ডার পেয়েছে দাসো অ্যাভিয়েশন, যার মধ্যে ৩০০টি ইতিমধ্যেই তৈরি ও সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি ২৩৩টি রাফালের ডেলিভারি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। দ্রুত উৎপাদন বাড়াতে সংস্থাটি তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। বর্তমানে প্রতি মাসে ৪টি রাফাল তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাফালের ইতিহাসও কম গৌরবজনক নয়। ২০০৪ সালে ফরাসি নৌবাহিনী প্রথমবারের মতো এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার শুরু করে। এরপর ২০০৬ সাল থেকে ফ্রান্সের বিমানবাহিনীর হাতে আসে এই বিমান। প্রথমবারের মতো রাফাল রফতানি করা হয় ২০১৫ সালে, মিশরের কাছে। পরে কাতার, গ্রীস, ক্রোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশও এই যুদ্ধবিমান ক্রয় করে।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ODI-তেই মিলেছে শোচনীয় হার! তবুও এই বিশেষ কারণে সন্তুষ্ট শুভমান
ভারত (India) ফ্রান্স থেকে মোট ৩৬টি রাফাল ফাইটার জেট ক্রয় করেছে। বিশেষভাবে কাস্টমাইজড এই বিমান ভারতীয় বায়ুসেনার প্রয়োজন অনুযায়ী আধুনিক অস্ত্র, সেন্সর ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে সজ্জিত। রাফাল যুদ্ধবিমান তার বহুমুখী ক্ষমতার জন্য পরিচিত। এটি একই সঙ্গে আকাশে ও স্থলে যুদ্ধ পরিচালনা করতে সক্ষম, পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে, এবং বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ব্যবহার করতে পারে। উন্নত রাডার, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং উচ্চ গতির ম্যানুভারিং ক্ষমতার জন্য রাফাল বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ফাইটার জেট হিসেবে বিবেচিত।
ভারতের (India) বায়ুসেনায় রাফালের সংযোজন ঘটে ২০২০ সালে, যা দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষমতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করে। ফরাসি দাসো অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, রাফালের (Rafale) উৎপাদন আগামী বছরগুলিতে আরও বৃদ্ধি করা হবে, যাতে আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা যায়। এই ৩০০তম রাফাল উৎপাদন তাই শুধু একটি সংখ্যা নয়, বরং এটি ফ্রান্সের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির এক উজ্জ্বল প্রতীক।