বাংলাহান্ট ডেস্ক: দীপাবলি (Diwali 2025) মানেই আলোর উৎসব, আর সেই উৎসবের উজ্জ্বলতম প্রতীক হয়ে উঠল এবার অযোধ্যা। রামের জন্মভূমি দীপোৎসবের রাতে যেন আলোয় ভেসে গেল। দীপাবলির আগেই উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় সরযূ নদীর দুই তীরে জ্বলে উঠল ২৬ লক্ষেরও বেশি প্রদীপ, যা গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নিল। এর পাশাপাশি একসঙ্গে ২,১২৮ জন ভক্তের অংশগ্রহণে আরতিরও বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলল রাজ্যটি। এই দুটি সাফল্যেই দীপোৎসবের ইতিহাসে যুক্ত হল নতুন অধ্যায়।
দীপাবলিতে (Diwali 2025) নতুন বিশ্বরেকর্ড যোগিরাজ্যের:
প্রতিবারের মতো এবারও দীপাবলি (Diwali 2025) উপলক্ষ্যে রবিবার বিকেল ৫টা থেকেই শুরু হয়েছিল অযোধ্যার এই মহোৎসব। সরযূ নদীর ঘাট যেন সোনার আলোর চাদরে মোড়া। প্রদীপ জ্বালানোর এই আয়োজন চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। নদীর ধারে হাজার হাজার মানুষ, ভক্ত, পর্যটক, শিল্পী আর ভলান্টিয়ার মিলে যেন গড়ে তুললেন আলোর সমুদ্র। গিনেস বুকের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ড্রোনের সাহায্যে প্রদীপের সংখ্যা গণনা করেন। দেখা যায়, মোট ২৬ লক্ষ ১৭ হাজার প্রদীপ জ্বালানো হয়েছে—যা নতুন বিশ্বরেকর্ড।
আরও পড়ুন:৩৫ লক্ষের ক্ষতি সামলে মাত্র ২ বছরে গড়লেন ৩০ কোটির টার্নওভারের ব্র্যান্ড! অবাক করবে কুণালের কাহিনি
এর পাশাপাশি দীপাবলি উপলক্ষ্যে (Diwali 2025) একইসঙ্গে ২,১২৮ জন ভক্ত আরতি করেন, সেটিও আর এক রেকর্ড। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে শ্রীরাম, লক্ষ্মণ ও সীতার আরতিতে অংশ নেন। তিনি পুষ্পক রথের দড়িও টানেন, যা দর্শকদের মধ্যে বিশেষ উচ্ছ্বাসের সঞ্চার করে। সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “এটি অযোধ্যাবাসীর গর্ব, এবং উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যের প্রতীক।”
দীপোৎসবে (Diwali 2025) অংশ নেন প্রায় ৩৩ হাজার ভলান্টিয়ার, যারা একত্রে এই বিশাল প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচি সফল করেন। তাঁদের হাতেই আলোয় ভরে ওঠে সরযূ নদীর ঘাট। শুধু দেশ নয়, বিদেশ থেকেও শিল্পীরা অংশ নেন এই ঐতিহাসিক উৎসবে। পাঁচটি দেশ থেকে আগত শিল্পীরা রামলীলা মঞ্চস্থ করেন, যা সন্ধ্যার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠে।
পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে চলেছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো এবং আতশবাজির রঙিন প্রদর্শনী। অযোধ্যার আকাশ ভরে যায় রঙিন আলোয়, নদীর জলে প্রতিফলিত হয় দীপাবলির (Diwali 2025) উজ্জ্বলতা। এ যেন শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অসাধারণ প্রদর্শন।
দীপোৎসবের এই আয়োজন প্রমাণ করল—অযোধ্যা শুধু ইতিহাসের স্মৃতি নয়, বরং আধুনিক ভারতের গর্ব। রামের জন্মভূমি আবারও প্রমাণ করল, আলো আর ঐক্যের এই উৎসব সবার, ধর্ম-বর্ণের সীমা ছাপিয়ে এক মানবিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে দীপাবলি (Diwali 2025)।