বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের অস্বস্তিতে শাসক দল তৃণমূল। এবার বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকেই দলের ভেতরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন (Zakir Hossain)। তিনি স্পষ্ট অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যদি একশো টাকা দেন, পঁচিশ টাকার কাজ হয়। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আমাদের সকলকে একসঙ্গে প্রতিবাদ করতে হবে।”
বিজয়া সম্মিলনীতে বিস্ফোরণ মন্তব্য বিধায়ক জাকিরের (Zakir Hossain)
রবিবার জঙ্গিপুরে অনুষ্ঠিত বিজয়া সম্মিলনী সভায় দলীয় বিধায়ক জাকিরের (Zakir Hossain) এই মন্তব্যে রীতিমতো অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। জাকির বলেন, “পুরসভার ভালো করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কিছু নেতা বাধা দিয়েছে।” তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা কাজ করতে চাই, কিন্তু কিছু স্বার্থসিদ্ধিকারী মানুষ দলকে নোংরা করছে।” তবে এই প্রথম নয়, অতীতে দুর্নীতির অভিযোগে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন এই শ্রমমন্ত্রী।
নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে গোরু পাচার, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তৃণমূলের একাধিক শীর্ষনেতা জড়িয়েছেন তদন্তে। ঠিক সেই সময়েই ২০২৩ সালে এক জনসভায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাশে বসে জাকির বলেছিলেন, “আমাদের দলের প্রধানরা চুরি করছে। তার দায় নিতে হচ্ছে দিদিকে। এই পরিস্থিতি বদলানো দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই না দিদির বা ববিদার বদনাম হোক। যে দুর্নীতি করছে, তাদের নামে অভিযোগ করুন আমার কাছে। আমি ববিদার কাছে জানাব। দাদাকে বলব, যে প্রধানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা যেন ধরা পড়ে। তা না হলে দল কখনও স্বচ্ছ হবে না।”!
জাকিরের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল নগদ ১১ কোটি
তবে যিনি আজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব, তাঁর বাড়িতেই গত বছর চাঞ্চল্যকরভাবে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ১১ কোটি টাকা। আয়কর দপ্তর জানিয়েছিল, জাকির হোসেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একাধিক নগদ নোট, নথি ও আয়-ব্যয়ের হিসাব। ওই ঘটনার পর তাঁকে হাজিরা দিতে হয় আয়কর দফতরে।
আরও পড়ুনঃ মমতার চিঠি ‘অসাংবিধানিক’? গোর্খা ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অধিকার’ বোঝালেন শুভেন্দু
অন্যদিকে, রাজ্যে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোট ঘিরে রাজনৈতিক পারদ চড়ছে দ্রুত। এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি শাসক দল, অথচ বিজেপির একাধিক এলাকায় প্রার্থীর নাম কার্যত ঘোষণা হয়ে গিয়েছে স্থানীয় নেতাদের মুখে। এরই মধ্যে জাকিরের (Zakir Hossain) এই প্রকাশ্য ক্ষোভ শাসক দলের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।