বাংলাহান্ট ডেস্ক: ধনতেরসের দিন যেন সত্যিই ধনবর্ষা নামল মথুরার বিখ্যাত বাঁকে বিহারী মন্দিরে (Banke Bihari Temple)। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৯ শতকের এই ঐতিহাসিক মন্দিরের তোষাখানায় সমীক্ষা চালাতে গিয়ে মিলল অমূল্য ধনসম্পদ। ৫৪ বছর পর পুনরায় খোলা হল মন্দিরের সেই রহস্যময় কোষাগার, আর তাতেই প্রকাশ্যে এলো ‘সাত রাজার ধন’।
বাঁকে বিহারী মন্দিরে (Banke Bihari Temple) “গুপ্তধনের সন্ধান”:
তথ্য অনুযায়ী, শেষবার এই বাঁকে বিহারী মন্দিরের (Banke Bihari Temple) গর্ভগৃহ সংলগ্ন তোষাখানা খোলা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। সেই সময় থেকেই এর ভেতরে কী কী ধনসম্পদ লুকিয়ে আছে, তা নিয়ে ছিল নানা জল্পনা। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে ১২ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক কুমার। আদালতের নির্দেশ মেনে গত শনিবার কমিটির উপস্থিতিতে খোলা হয় তোষাখানার ভারী লোহার তালা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিক, পুলিশকর্তা এবং চারজন পুরোহিত।
প্রথম দিন কোষাগারে বিশেষ কিছু না মিললেও নজরে পড়ে এক গোপন কক্ষ। রবিবার সেখানে প্রবেশ করতেই খুলে যায় রহস্যের দ্বার। উদ্ধার হয় সোনার ও রুপোর বার, মূল্যবান পাথর, কয়েন, বাসনপত্র এবং আরও বহু প্রাচীন সামগ্রী। মন্দিরের পুরোহিত দীনেশ গোস্বামী, যিনি সমীক্ষক দলের সদস্যও ছিলেন, জানান—“মন্দিরের (Banke Bihari Temple) গুপ্তকক্ষের ভেতরে প্রায় তিন-চার ফুট লম্বা একটি বাক্সে একটি সোনার বার ও তিনটি রুপোর বার পাওয়া গেছে, যাতে আবির লেগে ছিল। এছাড়া লাল ও সবুজ রঙের মূল্যবান পাথর এবং অসংখ্য প্রাচীন কয়েন উদ্ধার হয়েছে।”
তাছাড়া, মন্দিরের (Banke Bihari Temple) তোষাখানার ভেতরে বহু ধাতুর তৈরি বাসনপত্রও পাওয়া গিয়েছে, যা পুরোহিতদের অনুমান অনুযায়ী, ‘ঠাকুরজি’ অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের উপাসনায় ব্যবহার করা হতো। আরও কয়েকটি বাক্স উদ্ধার হলেও, সেগুলির বেশিরভাগ এখনও খোলা হয়নি। সমীক্ষার সময় পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে এবং প্রতিটি সামগ্রীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান দীনেশ গোস্বামী।
তবে, উদ্বেগের বিষয় হল—মন্দিরের (Banke Bihari Temple) কোষাগারের মধ্যে থাকা বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি এখনও মেলেনি। ইতিহাসবিদদের দাবি, ১৯ শতকে বহু রাজপরিবার এই মন্দিরে দান করেছিলেন স্বর্ণ, রৌপ্য ও জমি। সেই সমস্ত দানের নথিই ছিল এই তোষাখানার মধ্যে। সম্ভবত, সময়ের সঙ্গে সেগুলির কিছু অংশ হারিয়ে গেছে।
দুই দিন ধরে চলা এই সমীক্ষায় মন্দিরের ভেতরে আর কোনও অজানা কোণ অবশিষ্ট নেই বলে জানিয়েছে কমিটি। তবে এত বছর পর এই গুপ্তধনের সন্ধান মথুরা জুড়ে নতুন কৌতূহল ছড়িয়েছে। ধনতেরসের শুভ লগ্নে মন্দির (Banke Bihari Temple) থেকে পাওয়া এই সম্পদকে অনেকে ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ’ বলেও অভিহিত করছেন।