বাংলাহান্ট ডেস্ক: ছত্তিশগড়ে (Chattisgarh) ফের বড় মাপের আত্মসমর্পণ। রবিবার কাঁকের জেলার কেশকাল অঞ্চলে আত্মসমর্পণ করলেন ২১ জন মাওবাদী সদস্য। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই মহিলা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণকারীদের কাছ থেকে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি একে–৪৭ রাইফেল, দুটি ইনসাস রাইফেল এবং চারটি বন্দুক। ছত্তিশগড় পুলিশের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণকারীরা দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং এলাকায় একাধিক নাশকতা, তহবিল সংগ্রহ ও হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ছত্তিশগড়ে (Chattisgarh) ২১ মাওবাদীর আত্মসমর্পণ
ছত্তিশগড় (Chattisgarh) পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এঁদের মধ্যে রয়েছেন বিভাগের কমিটির সম্পাদক মুকেশ, সদস্য রাজু এবং কৈলাশ। তাঁরা সকলে কেশকাল অঞ্চলে মাওবাদী কার্যকলাপের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। আত্মসমর্পণকারী সদস্যদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
#WATCH | Chhattisgarh: A total of 21 Maoist cadres with 18 weapons from the Kuemari/Kiskodo Area Committee of Keshkal Division (North Sub Zonal Bureau), including Division Committee Secretary Mukesh, have come forward to join the mainstream. 4 DVCM, 9 ACM and 8 Party Members… pic.twitter.com/Mvvtm7nejm
— ANI (@ANI) October 26, 2025
ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh) উপ–মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা জানিয়েছেন, মাওবাদীদের অস্ত্র সমর্পণ ও মূলস্রোতে ফেরানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকার বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, “যাঁরা আত্মসমর্পণ করছেন, তাঁরা উন্নয়নের পথে ফেরার চেষ্টা করছেন। সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পের সুবিধা তাঁদের দেওয়া হবে।” বিজয় শর্মা আরও জানান, বস্তার অঞ্চলে ক্রমে শান্তি ফিরছে, যার ফলে উন্নয়নমূলক কাজেও গতি আসছে।
আরও পড়ুন:শুধু সোনা নয়, এবার রুপোর বিনিময়েও নেওয়া যাবে ঋণ! নয়া নিয়ম চালু করছে RBI
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজ্যের (Chattisgarh) বিভিন্ন প্রান্তে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের ধারা অব্যাহত। এর আগে ১৭ অক্টোবর বস্তার ডিভিশনের দান্তেওয়াড়া স্পেশাল জ়োন এলাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রূপেশ ওরফে সতীশের নেতৃত্বে আত্মসমর্পণ করেন ২১০ জন মাওবাদী। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র। এছাড়া, গত সপ্তাহে আরও ২৩১ জন মাওবাদী প্রায় ১৭০টি অস্ত্র নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: নতুন ভাবনাতেই বিরাট সাফল্য! লখনউর এই দম্পতি যা করে দেখালেন… উদ্বুদ্ধ করবে আপনাকেও
এরও আগে, ২ অক্টোবর ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh) বিজাপুর জেলায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন আরও ১০৩ জন মাওবাদী। ফলে অক্টোবর মাসেই চার দফায় মোট প্রায় ৫৬০ জন মাওবাদী প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজ্য প্রশাসনের মতে, এটি বিগত কয়েক বছরের মধ্যে মাওবাদী দমনে অন্যতম বড় সাফল্য।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, “আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই দেশ থেকে মাওবাদী সমস্যার সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে।” একইসঙ্গে তিনি আবেদন জানান, “যাঁরা এখনো অস্ত্র হাতে রেখেছেন, তাঁরা যেন সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসেন। সরকার তাঁদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে।” তিনি আরও সতর্ক করে দেন, “যদি কেউ উন্নয়নকে বাধা দেয় বা নিরীহ মানুষের ক্ষতি করে, নিরাপত্তা বাহিনী উপযুক্ত জবাব দেবে।” বস্তার আইজি পি সুন্দররাজ জানান, মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের এই প্রবণতা সরকারের পুনর্বাসন নীতির প্রতি আস্থার ফল। প্রশাসনের আশা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই ওই অঞ্চল মাওবাদমুক্ত হবে। ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh) জঙ্গলে ক্রমশ অস্ত্রের ঝনঝনানি স্তিমিত হয়ে আসছে। তার জায়গায় ফিরে আসছে স্কুল, রাস্তা আর আলো—যা শান্তির পথে এক নতুন সূর্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।













