বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে ফের একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালুর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও, দেশের শীর্ষ আদালত সম্প্রতি হাই কোর্টের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে। এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক জয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোটের মুখে আদালতের অবস্থান রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন নতুন কৌশল নিয়েছে পদ্ম শিবির। রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব চিন্তাভাবনা করছে, সাংসদদের কোনও প্রতিনিধি দলের নজরদারিতে বাংলায় ফের একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালুর পরামর্শ কেন্দ্রকে দেওয়ার। বুধবার এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব, সাংসদের নজরদারিতে বাংলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালু হোক।”
পাল্টা তোপ তৃণমূলের
তৃণমূলের দাবি, সংসদের নজরদারিতে প্রকল্প চলবে, আইনে এমন কোনও বিধান নেই। দলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “হাইকোর্টে হেরেছে, সুপ্রিম কোর্টে ঘাড় ধাক্কা খেয়েছে। এখন নিজেদের মুখরক্ষার জন্য বিজেপি নেতারা সস্তার নাটকবাজি করছে। সাংসদদের নজরদারিতে প্রকল্প চলার কোনও সম্ভাবনাই নেই। রাজ্য সরকার তার নোডাল এজেন্সির মাধ্যমে একশো দিনের কাজ করাবে। এটাই নিয়ম।”তিনি আরও বলেন, “সুকান্ত মজুমদার চাইলে সংসদে বিল এনে আইনই পরিবর্তন করে ফেলুন।”
গত কয়েক বছর ধরে একশো দিনের কাজের প্রকল্প ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্র টাকা বন্ধ করেছিল। এর প্রতিবাদে পথে নেমেছিল তৃণমূল, এমনকি দিল্লির রাজপথেও ধর্নায় বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বারবার প্রশ্ন তুলেছেন, “বাংলার গরিব মানুষের টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে?” তার জবাবে বিজেপি নেতারা প্রতিবার বলেছেন, “রাজ্য হিসেব দিক, কেন্দ্র প্রকল্প চালু করে দেবে।” কিন্তু এ বার আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রকে প্রকল্প ফের চালু করতেই হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতি বিজেপির জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কি বলেছেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)?
তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বিজেপি বলছে যে, প্রকল্প চালু করতে তারাও বরাবর আগ্রহী ছিল, কিন্তু তৃণমূলের দুর্নীতির জন্যই কাজ বন্ধ হয়েছিল। সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে দুর্নীতি প্রমাণিত। আদালত বলেছে, প্রকল্প চালু হওয়া দরকার, আমরাও বলছি চালু হওয়া দরকার। আদালত এও বলেছে, কেন্দ্র চাইলে স্পেশাল অবজারভেশন রাখতে পারে। তাই বলছি, সাংসদের নজরদারিতে বাংলায় মনরেগা প্রকল্প চালু হোক।” এছাড়া রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “একশো দিনের টাকা তৃণমূলের থেকেও বেশি বিজেপি চায়। কেন্দ্রীয় সরকার যে শর্ত দেবে, তা মানতে রাজ্য সরকার বাধ্য।”

তবে সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) মন্তব্যের কটাক্ষ করে অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “হাইকোর্টে পরাজয়ের পর এখন বিজেপি নেতারা মুখ বাঁচাতে নাটক করছে। সাংসদদের নজরদারিতে প্রকল্প চালুর কোনও আইন নেই, এটা কল্পনা ছাড়া কিছু নয়।”













