বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালির প্রতিবাদী গৃহবধূ রেখা পাত্রকে (Rekha Patra Sandeshkhali) চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। বসিরহাট কেন্দ্র থেকে দাঁড় করানো হয়েছে তাঁকে। কোনও ভয়ের তোয়াক্কা না করেই শেখ শাহজাহানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন রেখা। এবার তাঁকেই দেখা যাবে ভোট ময়দানে। যদিও রেখাকে প্রার্থী করার পর ফের এলাকায় শুরু হয়েছিল ‘বিক্ষোভ’! পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির (Sandeshkhali) মহিলারা। ‘সন্দেশখালির আন্দোলনকারীরা রেখা পাত্রকে চায় না’, দেখা যায় এমন পোস্টারও।
এরপর ২৪ ঘণ্টাও কাটতে না কাটতেই ভোলবদল! একদিন আগে অবধি যারা রেখার (Rekha Patra) বিরোধিতা করছিলেন তাঁরাই এবার তাঁকে সমর্থনের কথা বলছেন। রবিবার বসিরহাটের প্রার্থী হিসেবে রেখার নাম ঘোষণা করে বিজেপি (BJP)। এরপরেই সরব হন সন্দেশখালির আন্দোলনকারী মহিলাদের একাংশ। কেউ বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন। কারোর আবার দাবি ছিল, রেখা (Rekha Patra BJP) বলেছেন তাঁর সন্দেশখালির ভোট দরকার নেই! সব মিলিয়ে, ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি।
তবে এরপর একদিন কাটতে না কাটতেই সম্পূর্ণ বদলে গেল পরিস্থিতি। যে মহিলা বলেছিলেন, ‘নিজের নামটুকু সই করতে পারে না, সে বিধানসভা-লোকসভা কোথাও প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নয়’। তিনিই এখন বলছেন রেখার পাশে থাকার কথা। ওই মহিলার দাবি, তাঁদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। রেখা তাঁদের মধ্যেই একজন। সে টিকিট পাওয়ায় তাই খুশি।
আরও পড়ুনঃ ‘আর পারছিলাম না…’, ৬০-এর বেশি গ্রুপ লেফ্ট! ভোটের আগেই BJP ছাড়ছেন রুদ্রনীল ঘোষ?
আর একজন মহিলা আবার বলেছিলেন, তাঁদের পরিশ্রমের কারণেই আজ রেখা প্রার্থী হতে পেরেছেন। নাহলে তাঁর ভোটে (Lok Sabha Election 2024) দাঁড়ানোর কোনও যোগ্যতাই নেই! রাতারাতি নিজের অবস্থান বদলে ফেলেছেন তিনিও। ওই মহিলা মঙ্গলবার বলেন, ‘গতকালের জন্য রেখার কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি। আমাদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। অন্য দলের লোক, অন্য লোকের মাধ্যমে আমাদের ভুল বোঝাচ্ছিল। সেটা আমরা বুঝতে পেরেছি। আমরা রেখার পাশে আছি’। আর একজন মহিলার আবার হুঁশিয়ারি, ‘রেখার বিরুদ্ধে যাঁরা আমাদের ভুল বোঝাতে আসবে তাঁদের ঝাঁটা মেরে বিদায় করব। দরকার হলে ওঁর বাড়ি গিয়ে পা ধরে আমরা ক্ষমা চাইব’।
যদিও রেখার প্রতি সবার ক্ষোভ যে কমে গিয়েছে তা কিন্তু নয়। স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘যাঁরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা মানুষের দরজায় দরজায় ভোট ভিক্ষা করতে যাচ্ছে। রেখা পাত্রর ভাগ্য খুব ভালো যে ওনাকে প্রার্থী করা হয়েছে। অথচ তাঁকেই এখন এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। ওনাকে মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে। এদিকে রেখা পাত্র বলছেন, সন্দেশখালির মানুষের ভোট তাঁর দরকার নেই’। ওই নেতার কথায়, বিজেপি প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই রেখা পাত্রর দাবি, সন্দেশখালির ভোট দরকার নেই, এই মন্তব্য তিনি করেননি। বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘আমি শুনতে পেলাম আমি নাকি বলেছি যে সন্দেশখালির ভোট আমার প্রয়োজন নেই। একথা আমি বলতে পারি না। সন্দেশখালির মায়েদের জন্যই তো আমি এতদূর পৌঁছতে পেরেছি। সেই জন্য আমি একথা কখনও বলতে পারব না। আমি সন্দেশখালির মুখ। সন্দেশখালির সব মা প্রার্থী’।