বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রমবর্ধমান যাত্রীদের সঠিকভাবে পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে একের পর এক বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে পরিষেবা শুরু করেছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো সেমি-হাই স্পিড ট্রেনও। যেটি যাত্রীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই আবহে রেল মন্ত্রক সম্প্রতি বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন চালু করার ঘোষণা করেছে। যার ফলে প্রত্যক্ষভাবে লাভবান হবেন যাত্রীরা। প্রাথমিকভাবে, আশা করা হয়েছিল যে গত মাসে অর্থাৎ ২০২৫ সালের অক্টোবরে প্রথম বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন সফর শুরু করবে । কিন্তু, কিছু উল্লেখযোগ্য কারিগরি এবং ডিজাইন সংক্রান্ত ত্রুটির কারণে, ট্রেনটি অক্টোবর মাসে চলাচল শুরু করতে চলাচল শুরু করতে পারেনি। এখন প্রশ্ন হল বহু প্রতীক্ষিত বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনের পরিষেবা কবে থেকে যাত্রীরা পাবেন?
কবে থেকে চলবে বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন (Indian Railways)?
যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের দিকটি প্রাধান্য পাচ্ছে: রেলপথ মন্ত্রক (Indian Railways) বলেছে যে, যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিতেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই, এই ট্রেনের পরিষেবা চালু হতে কিছুটা সময় লাগলেও কোনও যাত্রীদের সুবিধায় কোনও আপোষ করা হবে না। সম্প্রতি, রেল বোর্ড একটি চিঠিতে জানিয়েছে যে ট্রেনগুলিতে কিছু ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। যা দ্রুত সংশোধন করা প্রয়োজন। যার মধ্যে ফার্নিশিং এবং কাজের মানের মতো সমস্যা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু বার্থের কাছে ধারালো কোণ পাওয়া গেছে। যা যাত্রীদের আঘাতের কারণ হতে পারে। এছাড়াও, জানালার পর্দার হাতলের নকশাও সুবিধাজনক ছিল না। পাশাপাশি, বার্থ কানেক্টরের মধ্যে এমন কিছু জায়গা ছিল যেখানে ধুলো জমেছিল। যার ফলে পরিষ্কার করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। বোর্ড স্পষ্টভাবে বলেছে যে এই ত্রুটিগুলি সংশোধন না করা পর্যন্ত ট্রেনটি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না।

অত্যাধুনিক ট্রেন: জানিয়ে রাখি যে, বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনকে দেশের সবচেয়ে নিরাপদ ট্রেন হিসেবে নিশ্চিত করার জন্য ভারতীয় রেল (Indian Railways) ক্রমাগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। মন্ত্রক স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা মান পূরণ না করে কোনও ট্রেন চলবে না। এই ট্রেনগুলিতে অত্যাধুনিক কবচ ৪.০ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সমস্ত অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে এবং ব্রেকিং সিস্টেম নিয়মিত পরিদর্শন করা হবে। ড্রাইভার, গার্ড এবং স্টেশন মাস্টারের মধ্যে আরও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে, ট্রেনের ভেতরে তাপমাত্রা এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে যাতে দরজা বারবার খোলার পরেও পরিবেশ আরামদায়ক থাকে। জরুরি পরিস্থিতিতে, প্রতিটি রুটে প্রশিক্ষিত কারিগরি কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। যাতে প্রয়োজনে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ট্রেনের কোচগুলি আলাদা করা যায়।
আরও পড়ুন: ‘মেয়েদের ক্রিকেট খেলার দরকার নেই’, সৌরভের ‘বিতর্কিত’ প্রতিক্রিয়ায় মোক্ষম খোঁচা তরুণজ্যোতির
সামনে এসেছে RDSO রিপোর্ট: বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেন সম্পর্কিত সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল RDSO (Research Design & Standards Organization) ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে মন্ত্রকে তাদের সেফটি ট্রায়াল রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান কমিশনারের (CCRS) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এখন অপেক্ষা করা হচ্ছে। সমস্ত প্রযুক্তিগত এবং ডিজাইন সম্পর্কিত ত্রুটি সম্পূর্ণরূপে দূর করা এবং CCRS থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই ট্রেনটি(Indian Railways) যাত্রীদের পরিষেবা প্রদানের জন্য তৈরি হবে। তবে, মন্ত্রক এখনও তারিখ চূড়ান্ত করেনি। কিন্তু মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, এই উচ্চ-গতির স্লিপার ট্রেনটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে ট্র্যাকে নামতে পারে।
আরও পড়ুন: RCB-র ঘটনা দিয়েছে শিক্ষা! ভারতের মহিলা দলের ভিক্ট্রি প্যারেড নিয়ে কী পরিকল্পনা BCCI-র?
রুট এখনও চূড়ান্ত হয়নি: এদিকে, এই ট্রেনের (Indian Railways) রুট এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, ভারতীয় রেল সমস্ত জোনকে এর রক্ষণাবেক্ষণের প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য, ট্রেন ছাড়ার আগে PA সিস্টেমে একটি ঘোষণা করা হবে যাতে যাত্রী নয় এমনদের নামতে বলা হবে এবং যাত্রার সময় হিন্দি, ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষা – এই ৩ টি ভাষায় নিরাপত্তা বার্তা ধারাবাহিকভাবে সম্প্রচার করা হবে। ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার গতির এই বৈদ্যুতিক ট্রেনটি দীর্ঘ দূরত্বের ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক করে তুলবে। এই ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কেবিনের অভ্যন্তরটি একটি ফাইভ স্টার হোটেলের মতো। যেখানে রিডিং লাইট থেকে শুরু করে, চার্জিং পয়েন্ট এবং আরামদায়ক আসন যাত্রীদের একটি প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।













