বাংলাহান্ট ডেস্ক: অপারেশন ‘সিঁদুর’-এর পরও শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। ফের জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) জঙ্গি হামলার ছক কষছে সে দেশের মদতপুষ্ট সংগঠনগুলি। সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদ ফের কাশ্মীর উপত্যকায় হামলার পরিকল্পনা করছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের মাটিতে বসেই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এই সংগঠনগুলি। তাদের পেছনে রয়েছে পাকিস্তানের সেনার স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (SSG) এবং কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা। সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফের জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) হামলার ছক!
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জম্মু ও কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারতীয় সেনা। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রণরেখা (LOC) বরাবর টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী জঙ্গিরা ইতিমধ্যেই ড্রোন ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালিয়েছে। ড্রোনের মাধ্যমে সীমান্তের দুর্বল জায়গাগুলি চিহ্নিত করে অনুপ্রবেশের পরিকল্পনা করছে তারা। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই আত্মঘাতী হামলার চেষ্টা হতে পারে উপত্যকায়।

আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য অফার! ChatGPT সাবস্ক্রিপশন ৩৬৫ দিনের জন্য একেবারে ফ্রি
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নতুন করে মোতায়েন করা হয়েছে বর্ডার অ্যাকশন টিম বা ব্যাট বাহিনী। মূলত ভারতীয় সেনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও সীমান্ত পারাপারে জঙ্গিদের সাহায্য করাই এই বাহিনীর উদ্দেশ্য। এতে স্পষ্ট, সীমান্তে সংঘাত বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে পাকিস্তান। নিরাপত্তা মহলের আশঙ্কা, অপারেশন ‘সিঁদুর’-এর পর প্রতিশোধের মানসিকতা থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) এই নতুন নাশকতার ছক তৈরি হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আইএসআই-এর আধিকারিকরা। সেই বৈঠকেই নাকি ভারতবিরোধী হামলার পরিকল্পনা গৃহীত হয় বলে রিপোর্টে দাবি। এরপর থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে লস্কর ও জইশের সদস্যরা।
গত এপ্রিলেই কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক। সেই ঘটনার পরই ভারত প্রতিশোধ নেয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে। সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালায় ভারতীয় সেনা, ধ্বংস হয় লস্কর ও জইশের বেশ কিছু ঘাঁটি। ওই অভিযানের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: জন্ম সনদ বিতরণে জালিয়াতি? কেএমসি-কে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর, আরটিআই ও লিখিত অভিযোগ জানালেন কমিশনকে
গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, পাকিস্তান এখন সেই প্রত্যাঘাতের জবাবে নতুন করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে নড়াচড়া বেড়েছে, নতুন জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, এমনকি আধুনিক অস্ত্র সরবরাহেরও প্রমাণ মিলেছে। ভারতীয় সেনা সূত্রের দাবি, যে কোনও হামলার মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বাহিনী। সীমান্ত বরাবর বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে, বাড়ানো হয়েছে থার্মাল সেন্সর ও ড্রোন টহল। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই নতুন ষড়যন্ত্র কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, তবে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জালে তা সফল হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।













