বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এসআইআর (SIR in West Bengal) কার্যক্রম ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা। ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্যে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক অভিযোগ উঠছে। BLO-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করছেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।
আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এসআইআর (SIR in West Bengal), অভিযোগ তৃণমূলের
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, এসআইআর (SIR in West Bengal)-এর নামে সাধারণ মানুষের মনে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, কোনও নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না, সেটাই নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যদিকে, বিজেপির বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাঁদের দাবি, এসআইআর-এর মাধ্যমে শুধুমাত্র মৃত ভোটার, অনুপ্রবেশকারী এবং একাধিক জায়গায় ভোটার হিসাবে নাম থাকা ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হবে। কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যাবে না বলে আশ্বস্ত করেছে বিজেপি।
তৃণমূল কাউন্সিলর অশোক রুদ্রর নাম উধাও
এই বিতর্কের মধ্যেই নতুন করে আলোড়ন ফেলেছে আসানসোলের ঘটনা। অভিযোগ, আসানসোল পৌরনিগমের ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অশোক রুদ্র ও তাঁর পরিবারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে উধাও। অশোক রুদ্র জানিয়েছেন, তাঁর বাবা চণ্ডীদাস রুদ্র, মা ঝর্ণা রুদ্র, তিনজনেরই নাম ওই তালিকায় নেই।
অশোক রুদ্রর অভিযোগ, “আমার দাদু সতীশ রুদ্র স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে রেলের চাকরি হারিয়েছিলেন তিনি। আমাদের জন্মভিটে, পরিবার, সবকিছু এখানেই। আমরা রোহিঙ্গা নই, বাংলাদেশি নই। অথচ ২০০২ সালের তালিকায় আমাদের নাম নেই। এই তালিকা একেবারেই ত্রুটিমুক্ত নয়।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
তৃণমূল কাউন্সিলর তথা রাজ্য কার্যকরী কমিটির সদস্য অশোক রুদ্রের দাবিতে প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। অশোক রুদ্র কমিশনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তুলে বলেন, “২০০২ সালের ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকাকে সামনে রেখে এত তাড়াহুড়ো করে এসআইআর করা হচ্ছে কেন? এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছেন। কেউ আত্মহত্যা করছেন, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।” তিনি আরও জানান, তাঁর কাছে সমস্ত প্রমাণপত্র রয়েছে, পাসপোর্ট, বাবার রেলের চাকরির সার্টিফিকেট, জন্ম সার্টিফিকেট। এই প্রসঙ্গে অশোক রুদ্র বলেন, “আমি প্রমাণ দিতে পারব, কিন্তু যাঁদের কিছুই নেই, তাঁদের কী হবে?” এমনই বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলেছেন অশোক রুদ্র।

আরও পড়ুনঃ ‘শিশুসাথী’ প্রকল্পে নতুন সংযোজন, শিশুদের দূরারোগ্য চিকিৎসায় নতুন বরাদ্দ ঘোষণা করলেন মমতা
অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “অশোক রুদ্র ও তাঁর পরিবারের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই, কেন নেই সেটা উনি ভালো জানেন। তখন উনি বাম শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সময় রেল কলোনিতে থাকতেন। ২০০২ সালে নাম কেন ছিল না, সেটা তাঁরাই বলবেন।” তিনি আরও বলেন যে, “এখন গোটা দেশে ১২টি রাজ্যে এসআইআর (SIR in West Bengal) চলছে। ভোটার লিস্ট তৈরি করার দায়িত্ব কোনও রাজনৈতিক দলের নয়, সেটা করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ১২টি নির্দিষ্ট নথির যেকোনও একটি জমা দিলেই নাম তালিকাভুক্ত হবে। কিন্তু তৃণমূল রাজনীতি করতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”













