বাংলাহান্ট ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) কুলগামে ফের তৎপর নিরাপত্তা বাহিনী। পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) থেকে পরিচালিত জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যে বৃহৎ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হয় অভিযান, যা শনিবার সকাল পর্যন্ত চলে। মূলত যাঁরা সীমান্তের ওপার থেকে নির্দেশ মেনে কাশ্মীরে লজিস্টিক, আর্থিক বা তথ্যগত সহায়তা দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। প্রশাসনের দাবি, উপত্যকায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভেঙে দেওয়ার এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) সেনার অভিযানে নিহত ২ জঙ্গি
শনিবার সকালে জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) কুপওয়ারা জেলার কেরণ সেক্টরেও সেনার অভিযানে দু’জন জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে। “অপারেশন পিম্পল” নামে পরিচিত এই যৌথ অভিযানে সেনা ও পুলিশ বাহিনী অংশ নেয়। জানা গেছে, এলাকাটিতে জঙ্গিদের উপস্থিতির নির্দিষ্ট তথ্য হাতে আসার পরেই শুক্রবার থেকে অভিযান শুরু হয়। সংঘর্ষের পর উদ্ধার হয় প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ।
আরও পড়ুন: ঠিক কোন কারণে ‘বন্দে মাতরম’ গানে কাঁচি চালিয়েছিল কংগ্রেস? চিঠি প্রকাশ করে জানাল বিজেপি
সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) পুলিশের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একটি উচ্চস্তরের বৈঠকের পর এই ব্যাপক অভিযান চালানো হয়। বৈঠকে ঠিক হয়, যাঁদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক বা লজিস্টিক সহায়তার অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্তের পরই কুলগামের একাধিক এলাকায় ঘেরাও ও তল্লাশি অভিযান (CASO) শুরু হয়। এই অভিযানগুলিতে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা সীমান্তের ওপারের আত্মীয়দের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রেখে জঙ্গি সংগঠনকে সাহায্য করছিলেন।

জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের সময় বেশ কিছু ডিজিটাল ডিভাইস, মোবাইল ফোন এবং বিপুল পরিমাণ নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এগুলির মধ্যে বহু তথ্য রয়েছে যা সীমান্তের ওপার থেকে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। আটক হওয়া কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ বা স্থানীয় সহায়তাকারী বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:সোনাঝুরি হাট স্থানান্তর? আদালতের নির্দেশে উঠল প্রশ্ন, উদ্বেগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
একজন সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই অভিযান দক্ষিণ কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) জঙ্গিদের সহায়ক নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার চলমান উদ্যোগের অংশ। তিনি বলেন, “সীমান্ত পেরিয়ে যে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া হচ্ছে, সেই কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেওয়া না পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে।”
এদিকে, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) বিভাগও সক্রিয় হয়েছে। জানা গেছে, বন্দিদের অবৈধ মোবাইল ফোন বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ঠেকাতে উপত্যকার বেশ কয়েকটি কারাগারে বিশেষ তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাশ্মীরের জঙ্গি কার্যকলাপ ও তাদের তথ্য আদানপ্রদান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার লক্ষ্য নিয়েছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে, কুলগাম ও কুপওয়ারায় এই অভিযানকে উপত্যকায় সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে বড় ধাক্কা বলে মনে করছে প্রতিরক্ষা মহল।












