বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তান (Pakistan) এবার ভারতের (India) চাল চুরি করতে শুরু করেছে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। ওই দেশটি ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দ্বারা তৈরি বাসমতির উন্নত জাতের বীজ চুরি থেকে শুরু করে অবৈধ চাষ পর্যন্ত করছে। ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অর্থাৎ IARI (Indian Agricultural Research Institute)-এর বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে, পাকিস্তান ভারতের তৈরি বাসমতির অন্তত ৬ টি জাত চুরি করে অবৈধভাবে চাষ ও বিক্রি করছে। সম্প্রতি, পাকিস্তানের মুলতান, বাহাওয়ালনগর, হাফিজাবাদের মতো এলাকায় কাজ করা একাধিক বীজ কোম্পানি এমন ভিডিও প্রকাশ করেছে। যার কারণে ভারতের কৃষি বিজ্ঞানীরা চিন্তায় রয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা কি নিয়ে চিন্তিত: জানা গিয়েছে যে, ২০২৩ সালে পাকিস্তানে প্রায় ২১ লক্ষ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি বাসমতি ধান চাষ করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৮৯ শতাংশ কৃষক IARI দ্বারা উদ্ভাবিত বাসমতি বীজ ব্যবহার করেছিলেন। পুসা বাসমতি (পিবি) লেবেলযুক্ত এই জাতগুলি দেশে বার্ষিক বাসমতি রপ্তানির ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ অবদান রাখে। যার মূল্য হল ৫ থেকে ৫.৫ বিলিয়ন ডলার।
পাকিস্তান কোন বাসমতি চুরি করছে: ভারতীয় কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বাসমতি চুরি করে আসছে। IARI PB-1121 প্রস্তুত করার ৩ বছর পর, পাকিস্তান এটি প্রকাশ করে এবং PK-1121 বা “কাইনাত” নামকরণ করে। একইভাবে PB-1509 “কিষাণ” বাসমতির নামে নিবন্ধিত ছিল। এদিকে, পাকিস্তানের বীজ কোম্পানি এবং তথাকথিত গবেষণা সংস্থাগুলি থেকে আসা ইউটিউব ভিডিওগুলিতে নতুন IARI জাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে PB-1847, PB-1885 এবং PB 1886। যেটি ২০২২-এর জানুয়ারি মাসে ভারতের বীজ আইনের অধীনে সামনে এসেছিল।
আরও পড়ুন: “মহাকাশে ভারত যা করছে তা বিস্ময়কর”, ISRO-র সাফল্যে অবাক ইউরোপিয় মহাকাশ সংস্থা! উঠল প্রশংসার ঝড়
ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় কেন: উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানের বাসমতি রপ্তানি কমেছে। তবুও ভারতীয় বাসমতি চালের জাতের চুরি উদ্বেগের কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসমতি চাল প্রধানত ভারত ও পাকিস্তানে জন্মায়। এদিকে, পাকিস্তান প্রধানত সুপার বাসমতি রপ্তানি করে। যেটি একটি উচ্চ ফলনশীল জাত। সেটি লাহোরের কাছে কালা শাহ কাকুতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (IARI) দ্বারা তৈরি করা হয়। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত, এই জাতটি পাকিস্তানকে বাদামী (বিনা পলিশ করা/ভুসি) বাসমতি চালের জন্য ইইউ-ইউনাইটেড কিংডমের বাজারে ৬৬ থেকে ৭০ শতাংশ শেয়ার পেতে সাহায্য করেছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে, এই শেয়ারটি ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ইশারায় কাজ! নিজের দেশ নিয়েই বিস্ফোরক মুইজ্জু, শোরগোল মলদ্বীপে
ভারতের কোষাগারের দিকে নজর: অন্যদিকে, ভারত সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং অন্যান্য পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক। কারণ ভারত বেশিরভাগই Parboiled Basmati Rice সরবরাহ করে। কিন্তু পাকিস্তানের মিলগুলি দ্রুত পারবোলিং প্রযুক্তি গ্রহণ করছে এবং কৃষকরা আরও ভালো IARI বাসমতি জাত রোপণ করছে। যা ভবিষ্যতে ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে এবং চালের বাজারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।