বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) স্বাস্থ্য সেবায় শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়। এক সময় এই এলাকা মানেই ছিল গুলির শব্দ, বিস্ফোরণ, আর আতঙ্ক। দিনদুপুরে কেউ ঘর থেকে বেরোতে পারতেন না। মহিলারা কাজ করতে ভয় পেতেন, শিশুরা খেলাধুলো ভুলে যেত। সেই দক্ষিণ গাডচিরোলিই আজ সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। শান্তির ছোঁয়া পেয়েছে মাওবাদী আতঙ্কে জর্জরিত এই জনপদ। শনিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস সেই গাডচিরোলিতেই পা রাখলেন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে—একটি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের উদ্বোধন করতে।
মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) মাওবাদী ঘাঁটি ভেঙে তৈরি প্রসূতি হাসপাতাল:
এই হাসপাতালটি বিশেষভাবে গড়ে তোলা হয়েছে মহিলা ও শিশুদের জন্য। যেখানে একসময় গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠত পাহাড়-জঙ্গল, সেখানে এখন শোনা যাচ্ছে নবজীবনের সুর। উদ্বোধনের দিন মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) মুখ্যমন্ত্রী ফড়ণবীস জানান, “গাডচিরোলির মতো অঞ্চলে এই ধরনের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা শুধুমাত্র উন্নয়নের প্রতীক নয়, এটা শান্তি ও মানবিকতার জয়।”
আরও পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা হয়ে যান সাবধান! হ্যাকারদের নিশানায় স্মার্টফোন, সতর্কতা জারি করল কেন্দ্র
৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই হাসপাতাল মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) দক্ষিণ গাডচিরোলির পাঁচটি তালুক—ইটাপাল্লি, ভাম্রাগড়, সিরোঞ্চা, ধনোরা ও অহেরি—এর মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দেবে। এতদিন পর্যন্ত এই এলাকার বাসিন্দাদের সামান্য অসুস্থতার জন্যও নাগপুর বা চন্দ্রপুরে যেতে হত। এখন থেকে নিজের জেলার মধ্যেই মিলবে আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা।
জেলাশাসক অভিশান্ত পান্ডে বলেন, “রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টার ফল এই হাসপাতাল। রাজ্য সরকার যে অর্থ বরাদ্দ করেছিল, তা যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয়েছে।” স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এই হাসপাতাল গড়ে ওঠায় গাডচিরোলির মানুষের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বলেছে (Maharashtra)।

আরও পড়ুন: গ্লোবাল ব্যাঙ্কিং সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার করবে ভারত! মেগা পরিকল্পনা তৈরি করছে SBI
১৩ হাজার স্কোয়ার মিটার এলাকায় তৈরি এই হাসপাতালটি একাধিক আধুনিক সুবিধাসহ চালু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সি-সেকশন বিভাগ, নবজাতক ও প্রসূতি বিভাগ, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং ২৪ ঘণ্টা জরুরি পরিষেবা। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে (Maharashtra)।
প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসুরক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তৈরি এই হাসপাতালটি গ্রামীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “যেখানে আগে ভয় ছিল, এখন সেখানে বিশ্বাস জন্মেছে। উন্নয়নই সবচেয়ে বড় অস্ত্র মাওবাদ বিরোধী লড়াইয়ে।”একসময় মাওবাদীদের ঘাঁটি হিসেবে কুখ্যাত দক্ষিণ গাডচিরোলি এখন মহারাষ্ট্র (Maharashtra) সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। বুলেটের জায়গা নিচ্ছে ব্যান্ডেজ, যুদ্ধের জায়গা নিচ্ছে চিকিৎসা। এক নতুন ভোরের পথে এগিয়ে চলেছে গাডচিরোলি, আর তার সাক্ষী রইল এই হাসপাতাল—মানবতার নতুন ঠিকানা।












