বাংলাহান্ট ডেস্ক: এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ার সময় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে এবার কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ না মেনে কাজ করার জন্য রাজ্যের আটজন বিএলও-কে (বুথ লেভেল অফিসার) শো-কজ নোটিস ধরানো হয়েছে। পাশাপাশি বিএলওদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শোনার জন্য রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে আজ থেকে বিশেষ সেল চালু হয়েছে। অভিযোগ গ্রহণের জন্য চালু করা হয়েছে একটি বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর— ০৩৩-২২৩১০৮৫০।
এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে BLO-দের কড়া নির্দেশ
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু এলাকায় অভিযোগ উঠেছে যে, নির্দিষ্ট নিয়ম ভঙ্গ করে শাসকদলের ক্যাম্প থেকে এসআইআর (SIR) এর এনুমারেশন ফর্ম বিলি করা হয়েছে। যা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের পরিপন্থী। এই অভিযোগগুলির ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট বিএলওদের শো-কজের নির্দেশ দিয়েছেন ইআরও (ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার)রা।
আরও পড়ুন: ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি! এবার মাওদের ঘাঁটি ভেঙে এই রাজ্যে তৈরি হল প্রসূতি হাসপাতাল
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে এসে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দল বিএলওদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ জারি করেছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়েই এসআইআর (SIR) এর এনুমারেশন ফর্ম দেবেন। কোনও ভাবেই কোনও রাজনৈতিক দলের বিএলএ (বুথ লেভেল এজেন্ট)-এর হাতে এনুমারেশন ফর্ম তুলে দেওয়া যাবে না। এছাড়াও কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র যাঁদের নাম ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় থাকবে, তাঁরাই এনুমারেশন ফর্ম পাবেন। কমিশন আরও জানিয়েছে, যদি কারও নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকলেও ২০২৫ সালের তালিকায় না থাকে, তিনি আপাতত এনুমারেশন ফর্ম পাবেন না। তবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর তিনি আবেদন করতে পারবেন। সেই আবেদন পর্যালোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
অভিযোগের ধরন অনুযায়ী বিএলওদের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথমবার অভিযোগ এলে সতর্ক করা হবে, তবে পুনরাবৃত্তি ঘটলে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই ক্ষেত্রে পদোন্নতি বা ইনক্রিমেন্টে কোপ পড়তে পারে, এমনকি সাসপেনশন পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে — যদি দেখা যায়, কোনও বিএলও ইচ্ছাকৃতভাবে কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন বা ভোটারদের এসআইআর (SIR)-এর ফর্ম দিতে অস্বীকার করছেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি এফআইআর দায়ের করা হবে।

আরও পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা হয়ে যান সাবধান! হ্যাকারদের নিশানায় স্মার্টফোন, সতর্কতা জারি করল কেন্দ্র
এছাড়া ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম স্পষ্ট করেছে কমিশন। জানানো হয়েছে, যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা, মা, দাদু, দিদা, ঠাকুর্দা বা ঠাকুমার কারও নাম না থাকে, তাহলে আবেদনকারী কাকা, ভাই, বোন বা অন্য কোনও নিকট আত্মীয়ের নথি জমা দিতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে শুনানি হবে এবং আবেদনকারীকে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন তাঁর পরিবারের প্রজন্মগত ভোটারদের নাম আগের তালিকায় নেই, এবং কেন আত্মীয়ের নথি ব্যবহার করা হচ্ছে (SIR)।
সব মিলিয়ে কমিশনের এই পদক্ষেপে স্পষ্ট— আগামী ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা তৈরি করতে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা অনিয়ম বরদাস্ত করবে না নির্বাচন কমিশন। বুথস্তরে কাজ করা প্রতিটি কর্মকর্তার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা অক্ষুণ্ণ থাকে (SIR)।












