বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফের ‘সিঁদুর’ আতঙ্কে কাঁপছে পাকিস্তান (Pakistan)। দিল্লির লালকেল্লার সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরই ইসলামাবাদ জুড়ে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট। সরকারি সূত্রের খবর, পাক সেনার স্থল, বায়ু ও নৌ – তিন বাহিনীকেই বিশেষ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীমান্তবর্তী ঘাঁটিগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা ও রাডার টিম। পাক গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ভারতের তরফে ফের শুরু হতে পারে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরবর্তী ধাপ।
দিল্লির বিস্ফোরণের পরই পাকিস্তানে (Pakistan) হাই অ্যালার্ট জারি
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটক-সহ ২৬ জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে লস্কর-ই-তইবা’র (LeT) ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট’ (TRF)-এর চার জঙ্গি। সেই ঘটনার জবাবেই ৭ মে ভোররাতে ভারত চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’। অভিযানে পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoJK) ও পাকিস্তানের (Pakistan) ভেতরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনা। তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয় লস্কর ও জইশ-ই-মহম্মদের একাধিক কমান্ড সেন্টার। নিহত হয় ১০০-রও বেশি জঙ্গি এবং অন্তত ৩৫ জন পাক সেনা।
আরও পড়ুন: বই পোকা ছেলেটাই ফিদায়েঁ জঙ্গি! দিল্লি বিস্ফোরণে উমরের নাম জড়াতেই স্তম্ভিত পরিবার ও প্রতিবেশীরা
ভারতের এই পালটা আঘাতের পরই পাকিস্তান (Pakistan) একাধিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়। সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনবহুল এলাকা ও সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে আক্রমণের চেষ্টা চালায় তারা। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী সেই হামলা প্রতিহত করে দেয়। পরবর্তী প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একাধিক জঙ্গি শিবিরও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ইসলামাবাদের অনুরোধে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি। তবে সেই সময়ই ভারত স্পষ্ট করে দেয়, ‘অপারেশন সিঁদুর’ শেষ হয়নি, এটি কেবল বিরতির পর্যায়ে রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দিল্লি বিস্ফোরণ ঘটনার পর ফের মাথা তুলেছে সিঁদুর আতঙ্ক। কোথাও পাকিস্তান (Pakistan) যোগ রয়েছে কিনা সেই নিয়েই চলছে তদন্ত। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা গাড়িতে আচমকা ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরও কয়েকটি গাড়িতে। সেসময় মেট্রো স্টেশনের বাইরে এবং পাশের জৈন ও উমাশঙ্কর মন্দির এলাকায় ভিড় ছিল প্রচুর। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে উপস্থিত জনতার মধ্যে।

আরও পড়ুন:পরিকল্পিত নাশকতা? অপারেশন সিঁদুরের বদলা নিতেই দিল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে হাফিজ সইদ? চলছে তদন্ত
দমকল ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। যদিও এখনও পর্যন্ত বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি, তবে নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না তদন্তকারী সংস্থা। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে রাসায়নিকের নমুনা সংগ্রহ করেছে। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন—এই বিস্ফোরণের সঙ্গে পাকিস্তানের (Pakistan) কোনও সরাসরি যোগ আছে কি না। দিল্লি পুলিশের হাতে কিছু গোয়েন্দা ইনপুট এসেছে, যেখানে লস্কর ও জইশের আন্তর্জাতিক মডিউলের সক্রিয়তা নিয়ে ইঙ্গিত রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যদি তদন্তে পাকিস্তানের (Pakistan) মদতের প্রমাণ মেলে, তাহলে ভারত ফের কি শুরু করবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর দ্বিতীয় পর্ব? প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, দিল্লির বিস্ফোরণ ভারতের জন্য শুধুই নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নয়—এটি হতে পারে কৌশলগত প্রতিশোধের প্রেক্ষাপটে নতুন অধ্যায়ের সূচনা।এক গোয়েন্দা আধিকারিকের কথায়, “অপারেশন সিঁদুরের জবাব দিতে পাকিস্তান আবার জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে বলে আশঙ্কা। তবে ভারতও প্রস্তুত। এবার প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হতে পারে।” দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্ত এখন এনআইএ-র হাতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস-যোগের কোনও সূত্র পাওয়া গেলে, তার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে — যেমনটা হয়েছিল মে মাসের ভোরে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়।












