বাংলাহান্ট ডেস্ক: দুই দিনের ভুটান (Bhutan) সফরে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার তিনি অংশ নেন ‘গ্লোবাল পিস প্রেয়ার ফেস্টিভ্যাল’-এ বা বৈশ্বিক শান্তি প্রার্থনা মহোৎসবে। ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের রাজা জিগ্মে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, প্রাক্তন রাজা জিগ্মে সিংগে ওয়াংচুক এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রীও। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল “কালচক্র শক্তিকরণ” বা কালচক্র সশক্তিকরণ অনুষ্ঠান, যার যৌথ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজা জিগ্মে খেসার ও প্রাক্তন রাজা জিগ্মে সিংগে ওয়াংচুক।
ভুটানে (Bhutan) বিশ্বশান্তির বার্তা নরেন্দ্র মোদির:
ভুটানে (Bhutan) কালচক্র উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “বৈশ্বিক শান্তি প্রার্থনা মহোৎসব সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুষঙ্গ। এই উৎসব কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি মানবতার ঐক্যের প্রতীক।” তিনি আরও বলেন, “কালচক্র অভিষেক এই মহোৎসবের মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বৌদ্ধ ভিক্ষু, পণ্ডিত ও অনুগামীরা একত্রিত হয়েছেন শান্তি, সহমর্মিতা ও মৈত্রীর বার্তা ছড়াতে।”
আরও পড়ুন:তাড়াহুড়োয় পালাতে গিয়ে অসাবধানতায় দিল্লিতে ঘটে বিস্ফোরণ? কী মনে করছেন গোয়েন্দারা?
ভুটানে (Bhutan) চলতি বছর এই আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মহোৎসব শুরু হয়েছে ৪ নভেম্বর থেকে, যা চলবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। থেরবাদ, মহাযান ও বজ্রযান — বৌদ্ধ ধর্মের তিনটি প্রধান শাখার অনুসারীরাই এখানে এক মঞ্চে মিলিত হয়েছেন। এই উৎসবে বুদ্ধের জ্ঞান, বাণী এবং তাঁর অবশিষ্ট রেলিকস বা ধ্বংসাবশেষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পাশাপাশি, বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতির জন্য বিশেষ প্রার্থনাও করা হয়। গোটা অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধান করছেন ভুটানের রাজা স্বয়ং। প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফরকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে ভারত ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে গভীর হলেও, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের কূটনীতি যে এক পরিবর্তনের সময় অতিক্রম করছে, তাতে এই সফরের কৌশলগত গুরুত্ব বিশেষ। বিশেষ করে যখন চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ—এই তিন প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা স্বাভাবিক নয়, তখন ভুটানের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে এই সফর।
মোদি তাঁর সফরের দ্বিতীয় দিনে অংশ নেবেন ভুটানের (Bhutan) রাজার ৭০তম জন্মজয়ন্তী উৎসবে। পাশাপাশি, দুই দেশের মধ্যে একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এই সফরেই উদ্বোধন করা হবে পুনাতসাংচু-২ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, যা ভারত-ভুটান উভয় দেশের জন্যই কৌশলগত ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ দুই দেশেই ব্যবহৃত হবে, যা শুধু শক্তি-সহযোগিতাই নয়, সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উন্নয়নকেও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:শীতের মরশুমে মিষ্টির নতুন ছোঁয়া, কমলালেবুর পুডিং বানানোর সহজ পদ্ধতি দেখুন…
ভুটান (Bhutan) সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদির এই উদ্যোগ শুধু বৌদ্ধ ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে ভারতের নেতৃত্বের অবস্থানকেও আরও এক ধাপ মজবুত করল। শান্তির বার্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার এই দ্বৈত প্রতীক হিসেবে মোদির ভুটান সফর নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করছে।












