স্বীকৃতি দেয়নি NAAC! দিল্লি বিস্ফোরণে নাম জড়ানো আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো হল শোকজ নোটিশ

Published on:

Published on:

Show cause notice sent to Al Falah University.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত আল-ফালা বিশ্ববিদ্যালয়কে (Al-Falah University) শোকজ নোটিশ। সোমবার দিল্লিতে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত যত গভীর হচ্ছে, ততই নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে সামনে। এবার তদন্তকারীদের নজরে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর থেকেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন চিকিৎসকের নাম উঠে আসায় তদন্তে গতি পেয়েছে। এদিকে, নতুন করে বিতর্কে জড়াল আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ, ন্যাক (ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল) তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিস পাঠিয়েছে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের ওয়েবসাইটে ন্যাকের অনুমোদনের মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে, অথচ ন্যাক তাদের কোনও স্বীকৃতি দেয়নি।

আল-ফালা ইউনিভার্স (Al-Falah University) শোকজ নোটিশ ন্যাক-এর:

ন্যাকের পাঠানো শোকজ় নোটিসে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়(Al-Falah University) কখনও অ্যাক্রিডিটেশনের জন্য আবেদনই করেনি। ন্যাকের তরফে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যে তথ্য দেওয়া রয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর। সেখানে দাবি করা হয়েছে, “আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয় আল-ফালাহ্‌ চ্যারিটেবল ট্রাস্টের উদ্যোগে তৈরি। এর ক্যাম্পাসে তিনটি কলেজ চালানো হয়— আল-ফালাহ্‌ স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (১৯৯৭ সাল থেকে রয়েছে, ন্যাক ‘এ’ গ্রেড দিয়েছে), ব্রাউন হিল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (২০০৮ সাল থেকে), এবং আল-ফালাহ্‌ স্কুল অফ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (২০০৬ সাল থেকে, এটিকেও ‘এ’ গ্রেড দিয়েছে ন্যাক)।”

আরও পড়ুন: পুরীর মন্দিরে প্রাণ ফিরে পেল মৃত শিশু? ভিডিও ভাইরাল হতেই চমকে গেলেন নেটিজেনরা

ন্যাক জানিয়েছে, এই সমস্ত দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনও কলেজকেই ন্যাকের তরফে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এই ভুল তথ্য পড়ুয়া, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকেই বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ ন্যাকের। তাই বিশ্ববিদ্যালয় (Al-Falah University) কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে এবং ওয়েবসাইট থেকে মিথ্যা তথ্য অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কেঁপে ওঠে রাজধানী। একটি সাদা রঙের গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে প্রাণ যায় ১৩ জনের, আহত হন বহু মানুষ। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে তিনজন চিকিৎসককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত মুজ়াম্মিল আহমেদ ও শাহিন শহিদ দু’জনেই ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজে (Al-Falah University) কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও, শ্রীনগরে জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগে ধৃত আদিল মাজ়িদ রাথরের সঙ্গেও ওই মেডিক্যাল কলেজের যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Show cause notice sent to Al Falah University.

আরও পড়ুন:মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা নিয়েই গা ঢাকা দিয়ে পাক-বাংলাদেশি বাসিন্দারা! দিল্লি-আতঙ্কে বিশেষ নির্দেশ পুলিশ-গোয়েন্দাদের

এই ঘটনার পর থেকেই আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয় (Al-Falah University) এবং তার অধীনস্থ মেডিক্যাল কলেজের উপর তদন্তকারীদের নজর পড়েছে। কলেজের পড়ুয়া ও চিকিৎসক মহলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, তাঁরা মুজ়াম্মিল বা শাহিনদের ব্যক্তিগত কার্যকলাপ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাঁদের আশঙ্কা, এই ঘটনার প্রভাবে ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Al-Falah University) যাত্রা শুরু হয় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে। ৭৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান পরবর্তী সময়ে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চালু করে। ২০১৯ সালে আল-ফালাহ্‌ মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্স শুরু হয় এবং দু’বছর পর স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্স চালু হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ‘আল-ফালাহ্‌ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর অধীনে পরিচালিত হয়। কিন্তু দিল্লি বিস্ফোরণের পর একের পর এক অভিযোগে এই বিশ্ববিদ্যালয় এখন কার্যত তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে।