নিমেষের মধ্যে মোতায়েন সম্ভব সেনা! চিন সীমান্তের কাছেই ১৩,৭০০ ফুট উচ্চতায় ভারতের বিমানঘাঁটির উদ্বোধন

Published on:

Published on:

India inaugurates air base near China border.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: চিনের নাকের ডগায় লাদাখে ভারতের (India) এক নতুন শক্তি কেন্দ্রের উত্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩,৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নিয়োমা বিমানঘাঁটি বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়ে গেল। এই বিমানঘাঁটিকে ঘিরে ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশল এক নতুন দিক পেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এটি শুধুমাত্র দেশের সর্বোচ্চ বিমানঘাঁটিই নয়, একইসঙ্গে চিন সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে সীমান্তে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে অতি দ্রুত বাহিনী ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা সম্ভব হবে।

চিন সীমান্তের অদূরেই ভারতের (India) বিমানঘাঁটি খুলল:

বুধবার ভারতীয় (India) বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং নিজে হিন্ডন ঘাঁটি থেকে একটি সি-১৩০জে ‘সুপার হারকিউলিস’ বিমানে চড়ে নিয়োমায় অবতরণ করেন। তাঁর অবতরণের সঙ্গেই এই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। সূত্রের খবর, এই ঘাঁটির ২.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রানওয়ে থেকে সহজেই উড়তে পারবে রাফাল ও এসইউ-৩০ এমকেআই-এর মতো যুদ্ধবিমান। এর ফলে সীমান্ত এলাকায় বায়ুসেনার কার্যক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত।

আরও পড়ুন:স্বীকৃতি দেয়নি NAAC! দিল্লি বিস্ফোরণে নাম জড়ানো আল ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো হল শোকজ নোটিশ

এই বিমানঘাঁটি নির্মাণ করেছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে দূরমাধ্যমে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন ভারতের (India) প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তখন থেকেই এই ঘাঁটিকে ঘিরে দেশজুড়ে ছিল উৎসাহ ও প্রত্যাশা। আর এদিন সেই স্বপ্ন বাস্তব রূপ পেল।

প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, এই বিমানঘাঁটির প্রধান লক্ষ্য হল প্যাংগং, দেমচোক এবং ডেপসাং-এর মতো দুর্গম ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দ্রুত সেনা ও সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া। লাদাখের দুর্গম পর্বতাঞ্চলে এমন এক ঘাঁটির প্রয়োজন বহুদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছিল। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় ভারতীয় (India) সেনা ও বায়ুসেনা ক্রমাগত তাদের প্রতিরক্ষা পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী করার দিকে জোর দিচ্ছে।

India inaugurates air base near China border.

আরও পড়ুন: চিংড়িঘাটা মেট্রোর কাজ শুরু নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা, তীরে এসে তরী ডুববে না তো?

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সংঘর্ষের পর থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর টানা ছয়বার সেনা প্রত্যাহারের চেষ্টার পরেও দুই দেশের মধ্যে সম্পূর্ণ আস্থা ফেরেনি। এখনো পর্যন্ত লাদাখের একাধিক এলাকায় সেনা মোতায়েন রয়েছে উভয় পক্ষেরই। ফলে এই বিমানঘাঁটির কার্যক্রম শুরু হওয়া ভারতের (India) প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এক বড় আশ্বাস হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনা প্রত্যাহার না হওয়ায় স্পষ্ট যে, এ বছরও শীতকালে সীমান্তে সেনা মোতায়েন থাকবে। নিয়োমা ঘাঁটি সেই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।”

নিয়োমা বিমানঘাঁটির উদ্বোধন এমন এক সময় যখন ভারত (India)-চিন সম্পর্ক ধীরে ধীরে কূটনৈতিক পথে উন্নতির দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু সীমান্ত সমস্যা এখনও অমীমাংসিত। তাই এই বিমানঘাঁটির উদ্বোধন কূটনৈতিকভাবে একটি শক্ত বার্তাও বহন করছে। ভারতের এই পদক্ষেপ কেবল প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি নয়, বরং চিনকে কৌশলগতভাবে এক স্পষ্ট ইঙ্গিত— সীমান্তে কোনও পরিস্থিতিতেই ভারত প্রস্তুত।