বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ (Bihar Assembly Election 2025)–এর ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ঠিক হয়ে যাবে কে হবে আগামী মুখ্যমন্ত্রী এবং কোন দল গঠন করবে সরকার। তবে এবারের নির্বাচনী সমীকরণ আগের মতো শুধুই দল বা জাতিভিত্তিক রাজনীতিতে আটকে নেই। রাজনীতির মাঠে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে মহিলা ভোটার এবং তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা ঘিরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই শ্রেণির ভোটই এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠেছে।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে (Bihar Assembly Election 2025) বড় ভূমিকা পালন মহিলাদের:
গত এক দশকে মেয়েদের জন্য সরকারি সাইকেল প্রকল্প, বিভিন্ন স্তরে স্কলারশিপ, স্বনির্ভর উদ্যোগে সহায়তা এবং প্রত্যক্ষ নগদ সুবিধা তাদের সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে। আগে যেখানে মহিলাদের ভোটকে পারিবারিক সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে দেখা হতো, এখন তারা নিজস্ব মত ও প্রত্যাশা নিয়ে ভোট দিতে আসছেন। রাজনীতিতে মহিলাদের এই আত্মনির্ভর অংশগ্রহণ বিহারের নির্বাচনী (Bihar Assembly Election 2025) ছবিকে বদলে দিচ্ছে।
অন্যদিকে, বিহারের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ৩৫ বছরের নিচে, যেখানে প্রথমবার বা দ্বিতীয়বার ভোট (Bihar Assembly Election 2025) দিচ্ছেন এমন যুবকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এই তরুণ ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন চাকরি, উচ্চশিক্ষা, শিল্পোন্নয়ন এবং রাজ্যের বাইরে কাজে যেতে না হওয়ার নিশ্চয়তা। তাদের প্রত্যাশা পূরণ না হলে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যেতে সময় লাগবে না। প্রতিটি দলই তাই এবার ‘এমওয়াই’- অর্থাৎ ‘মহিলা–যুবা’ ভোটব্যাঙ্ককে কেন্দ্র করেই প্রচার গড়ছে।
মহিলা ও যুবাদের কাছে রাজ্য পরিচালনা মানে শুধু নেতৃত্বের প্রতীকী উপস্থিতি নয়, বরং বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং সুযোগ সৃষ্টি। তাই রাজনৈতিক দলগুলিও বুঝেছে যে জনসংযোগ বাড়ানো এবং প্রকল্পের সাফল্য দেখানোর পাশাপাশি বাস্তবমুখী প্রতিশ্রুতি দেওয়া জরুরি। এই কারণে নির্বাচনী (Bihar Assembly Election 2025) ইস্তাহারেও এবার কল্যাণমূলক প্রকল্প, শিক্ষায় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নারী নিরাপত্তা এগুলোই প্রাধান্য পেয়েছে।

আরও পড়ুন: SIR নিয়ে কড়া কমিশন! আজ বিকেলের মধ্যেই ‘বড়’ পদক্ষেপের প্রস্তুতি
প্রতিটি বড় দলই এই বিশেষ ভোটার গোষ্ঠীকে ধরতে আলাদা কৌশল নিয়েছে। ক্ষমতাসীন জোট মহিলাদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প ও ছাত্রবৃত্তি কর্মসূচির সাফল্য তুলে ধরছে। তারা উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার বার্তা দিচ্ছে। অন্যদিকে, বিরোধী শিবির বেকারত্ব, দুর্নীতি, শিল্পহীনতা এবং ব্যাপক শ্রম-পালায়নকে প্রধান ইস্যু হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে। তরুণদের জন্য চাকরি সৃষ্টির পরিকল্পনা, নতুন স্টার্টআপ নীতি এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নও তাদের প্রতিশ্রুতির কেন্দ্রবিন্দু। এবারের নির্বাচনে (Bihar Assembly Election 2025) মহিলা প্রার্থীদের সংখ্যাও বেড়েছে, যা রাজনৈতিক দলগুলির নতুন মনোভাব স্পষ্ট করে। ভোটারদের আবেগ ও বাস্তব চাহিদার উপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ায় নির্বাচন আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সমীক্ষকদের মতে, বিহারে ২০২৫ সালের নির্বাচন (Bihar Assembly Election 2025) পুরোনো সাম্প্রদায়িক বা জাতভিত্তিক সমীকরণকে আংশিক হলেও ভেঙে দিচ্ছে। ভোটের ভাগ্য নির্ধারণে এইবার সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা নেবে মহিলারা ও যুব ভোটাররা। ফলাফল প্রকাশের পরই স্পষ্ট হবে তাদের পছন্দ কোন দল ও নেতৃত্বকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য শাসনভার দিতে চলেছে।












