বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জেতার পর একযোগে বিরোধীদের বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল প্রকাশ হতেই স্পষ্ট হয়ে গেল—রাজ্যের রাজনীতিতে চলেছে গেরুয়া ঝড়। প্রত্যাশার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারল না মহাগঠবন্ধন। কার্যত ধুলিসাৎ হয়ে গেল বিরোধী শিবিরের ভরসা, আর সেই জায়গায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে উঠে আসছে বিজেপি। এনডিএর এই দাপুটে জয়ের পিছনে নারী ভোট এবং যুবসমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বক্তব্য, আরজেডির এতদিনের ভরসা ছিল মুসলিম-যাদব বা এমওয়াই সমীকরণ। কিন্তু এবার বিহারের ভোট-সমীকরণ পুরো বদলে দিয়েছে নতুন ‘এমওয়াই কম্বিনেশন’—মানে মহিলা এবং যুব ভোট। মোদির দাবি, এই দুই শক্তিই দু’হাত তুলে সমর্থন করেছে এনডিএকে।
বিহার থেকে বিরোধীদের বার্তা মোদির (Narendra Modi)
শুক্রবার সন্ধ্যায় জয়ের আবহে বিরোধী জোটকে তীব্র আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi)। তাঁর ভাষণের বড় অংশজুড়ে ছিল কংগ্রেস ও লালু প্রসাদ যাদবকে লক্ষ্য করে কটাক্ষ। মোদির কথায়, শুধু আসন সংখ্যাতেই নয়, বিহারের জাতি-সমীকরণেও এবার পিছিয়ে পড়েছে আরজেডি-কংগ্রেসের জোট। মুসলিম-যাদব ভিত্তিক তাদের ভোটব্যাঙ্কে বড় ফাটল ধরেছে। কারণ, এ বছর ভোটে মহিলা ও যুবদের ঝোঁক স্পষ্টতই এনডিএর দিকে।
আরও পড়ুন:কনিষ্ঠতম বিধায়ক! নির্বাচনে জয়ের পরেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে ভাসলেন মৈথিলী
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জেডিইউ সরকার মহিলাদের জন্য যে সমস্ত কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে—যেমন সাইকেল যোজনা, বৃত্তি, সেল্ফ-হেল্প গ্রুপে ঋণ দেওয়া এবং সম্প্রতি আর্থিক সহায়তা—সেগুলি সরাসরি ভোটে প্রতিফলিত হয়েছে। সেই সঙ্গে যুবদের কাছে নীতীশ সরকারের উন্নয়ন এবং চাকরির প্রতিশ্রুতি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মোদি (Narendra Modi) নিজেও দাবি করেছেন, জঙ্গলরাজের দিন শেষ করে জেডিইউ বিহারকে উন্নয়নের পথে নিয়ে গেছে, তাই যুবরা নীতীশের উপর আস্থা রাখছে।
বাংলা লাগোয়া বিহারের সীমাঞ্চল—আরারিয়া, কাটিহার, কিষানগঞ্জ এবং পুর্ণিয়া জেলা—নির্বাচনে সবসময়ই সংখ্যালঘু ভোটের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। মোট ২৪টি আসনের এই অঞ্চলে মুসলিম ভোট একপ্রকার নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। SIR ইস্যুর পরে কংগ্রেস ভেবেছিল এই এলাকায় সংখ্যালঘু ভোট একত্রিত হবে তাদের দিকে। কিন্তু ফলাফল জানিয়ে দিল পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। সীমাঞ্চলে মহাজোট কার্যত শূন্যের কোঠায়। কয়েকটি আসনে ওয়েইসির এআইএমআইএম লড়াইয়ে জায়গা করলেও বড় অংশে পদ্মফুল ফুটেছে। নীতীশ কুমারের তীর চিহ্নও বহু আসনে শক্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। উল্টো দিকে আরজেডি-কংগ্রেসের হাতে এসেছে হ্যারিকেন। এরপরই মোদি (Narendra Modi) এক্স হ্যান্ডেলেও জয়ের শুভেচ্ছা জানান।

আরও পড়ুন:বড় ঘোষণা আদানি গ্রুপের! এই রাজ্যে করবে ১ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ, সামনে এল পরিকল্পনা
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, SIR-এর কারণে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে, ফলে মহাজোটের ভোটব্যাঙ্ক নিজে থেকেই খানিকটা ক্ষয় হয়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘুরা এনডিএর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহাজোটের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেননি। সেই অবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত ঘুরিয়ে দিয়েছে সীমাঞ্চলের ফলাফল। সামগ্রিকভাবে বিহার জানিয়েছে তাদের মত—উন্নয়নের নামেই তারা এনডিএকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চাইছে।এর পাশাপাশি বাংলার ভোট নিয়েও বার্তা দেন মোদি (Narendra Modi)।












