বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অভিযোগ নেই, নাম নেই এফআইআর বা চার্জশিটে,তবু এক নিরপরাধ ব্যক্তিকে টানা ৩০ দিন জেলে কাটাতে হল পুলিশের ‘ভুলে’। আর সেই ঘটনাতেই চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ল মুর্শিদাবাদের সুতি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।
কী বলেছে হাই কোর্ট (Calcutta High Court)?
ভুয়ো মামলায় গ্রেপ্তার করে এক দোষহীন ব্যক্তিকে টানা ৩০ দিন জেলে রাখার অভিযোগে সুতি থানার তদন্তকারী অফিসার ও থানার ওসি-র ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। আদালতের মন্তব্য, এমন ঘটনা কোনওভাবেই ‘ছোট ভুল’ হিসেবে ধরা যায় না। এর জন্য তদন্তকারী অফিসারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা সাত দিনের মধ্যে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আদালত (Calcutta High Court) সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল একটি অভিযোগের ভিত্তিতে নাসির নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সুতি থানার পুলিশ। পরে ২৬ জুলাই নিম্ন আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করলেও তার আগেই ১৭ জুলাই অন্য একটি মামলায় ফের তাঁকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। কিন্তু, নাসির জেল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানান যে, যে মামলায় তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই মামলার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগই নেই। এফআইআর, চার্জশিট, কোনও নথিতেই নেই তাঁর নাম। এমনকী তাঁর নামে কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি। তবু বিনা কারণে তাঁকে জেলে থাকতে হয়েছে, অভিযোগ তাঁর।
জেল কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার জানিয়েও কোনও সমাধান মেলেনি। অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নাসির ন্যায়বিচারের আশায় হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন। আদালতে তাঁর পক্ষের বক্তব্য, পুলিশ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পালন না করে এক নির্দোষ ব্যক্তিকে মাসভর কারাবন্দি রেখেছে, যা চরম গাফিলতি। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আবেদন জানান তিনি।
শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী জানান, অপরাধ নথিভুক্ত করার সময় ‘লেখার ভুল’ করেছিলেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী। আর সেই ভুলের কারণেই নাসির গ্রেপ্তার হয়েছেন ও জেলে ছিলেন। রাজ্যের এই ব্যাখ্যায় বিস্মিত হন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। আদালত (Calcutta High Court) এই প্রসঙ্গে বলেন, “এটা কোনওভাবেই ছোট ভুল বলে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”

আরও পড়ুনঃ সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের দাবিতে তপ্ত কর্মী মহল, রাজ্যকে আইনি নোটিশ ইউনিটি ফোরামের
ফলে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা আর ওসি-র ভূমিকা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন বিচারপতি। আদালতের (Calcutta High Court) নির্দেশ, এই ধরণের গাফিলতি রুখতে কঠোর নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।












