ট্রাম্পের পরিকল্পনা ফের হল ব্যর্থ? অক্টোবরে রাশিয়া থেকে কত তেল কিনল ভারত?

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: রুশ কাঁচা তেলকে (Russian Oil Import) আন্তর্জাতিক বাজারে আসতে বাধা দিতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে বাস্তবে তেমন সাফল্য মিলছে না। হেলসিঙ্কি-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (CREA)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট সেই চিত্রই স্পষ্ট করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে রুশ তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারকের তালিকায় ভারতের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়, চীনের ঠিক পরেই। ওই মাসে ভারত প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলারের রুশ কাঁচা তেল আমদানি করেছে, যেখানে চীনের আমদানি ছিল ৩.৭ বিলিয়ন ডলার। এই সময়ে মার্কিন প্রশাসন ভারত ও চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত থাকলেও রুশ তেল আমদানিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পতন দেখা যায়নি।

রুশ তেল আমদানি (Russian Oil Import) থেকে আটকানো যাচ্ছে না ভারত-চিনকে

CREA জানায়, অক্টোবর মাসে রাশিয়া (Russian Oil Import) থেকে ভারতের মোট ফসিল ফুয়েল আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১ বিলিয়ন ডলারে। একই সময়ে চীন আমদানি করেছে ৫.৮ বিলিয়ন ডলারের ফসিল ফুয়েল। আমদানিকারকদের তালিকায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার নিয়ে তুরকি তৃতীয় স্থানে, আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ১.১ বিলিয়ন ডলারের আমদানির ভিত্তিতে ছিল চতুর্থ স্থানে। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও চীনের ওপর রুশ তেল কেনা কমানোর চাপ বাড়াচ্ছে। তাদের দাবি, রুশ তেলের বিপুল রাজস্ব ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধকে আর্থিকভাবে সহায়তা করছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার শীর্ষ দুই তেল রপ্তানিকারক সংস্থা রোসনেফট ও লুকোইল-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। CREA মনে করছে, এসব নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ডিসেম্বর মাসের আমদানি পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হতে পারে।

আরও পড়ুন:এসআইআর দৌড়ে এগোচ্ছে বাংলা! ৯৮ শতাংশ ফর্ম বিলি শেষ, সোমবার থেকেই শুরু সংগ্রহ

চিন শুধু কাঁচা তেলেই নয়, রুশ কয়লারও সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে। রুশ কয়লা আমদানিতে ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়, আর এরপরেই তুরকি। অক্টোবর মাসে ভারত ৩৫১ মিলিয়ন ডলারের রুশ কয়লা এবং ২২২ মিলিয়ন ডলারের পরিশোধিত তেলপণ্য আমদানি করেছে। সেই তুলনায় তুর্কি গত মাসে রুশ তেলপণ্য আমদানিতে শীর্ষে ছিল—মোট আমদানি ৯৫৭ মিলিয়ন ডলারের, যার প্রায় অর্ধেকই ছিল ডিজেল। দেশটি একই সময়ে রুশ গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে ৯২৯ মিলিয়ন ডলারের গ্যাস এবং ৫৭২ মিলিয়ন ডলারের কাঁচা তেল (Russian Oil Import) আমদানি করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা পুরোপুরি ছিন্ন করতে পারেনি। অক্টোবরেই তারা ৮২৪ মিলিয়ন ডলারের রুশ এলএনজি ও পাইপলাইন গ্যাস আমদানি করেছে এবং অতিরিক্ত ৩১১ মিলিয়ন ডলারের রুশ কাঁচা তেল কিনেছে। দক্ষিণ কোরিয়া তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে, যাদের রুশ ফসিল ফুয়েল আমদানির মোট মূল্য ছিল প্রায় ২১৫ মিলিয়ন ডলার। কোরিয়ার আমদানির ৫৩ শতাংশ ছিল কয়লা, এরপর এলএনজি ১০৭ মিলিয়ন ডলার এবং তেলপণ্য ৮০ মিলিয়ন ডলারের।

In October how much Russian Oil Import in India?

আরও পড়ুন:এক ধাক্কায় কমল সোনার দাম! কলকাতায় ২২ ও ২৪ ক্যারাটের দর কত জানুন…

CREA-এর রিপোর্ট স্পষ্ট বোঝাচ্ছে যে বৈশ্বিক বাজারে রুশ জ্বালানির প্রভাব এখনো অটুট। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, নিষেধাজ্ঞা বা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা—কোনোটিই এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানির ধারা রুখতে পারেনি। বরং ভারত-চিন-তুর্কি-ইউরোপ, সবাই নিজ নিজ অর্থনৈতিক সুবিধা-চাহিদা অনুযায়ী রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বজায় রেখেছে।