বাংলাহান্ট ডেস্ক: লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ (Delhi Red Fort Blast) মামলায় উঠে এল নতুন তথ্য, যা তদন্তের গতি বদলে দিতে পারে বলে মনে করছে দিল্লি পুলিশ। বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৯ মিমি কার্তুজের তিনটি নমুনা— যার মধ্যে দুটি লাইভ রাউন্ড এবং একটি খালি শেল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ধরনের গোলাবারুদ সাধারণত সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তাবাহিনীই ব্যবহার করে। কিন্তু ঘটনাস্থলে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র বা অস্ত্রাংশ পাওয়া যায়নি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই কার্তুজগুলি সেখানে এল কীভাবে? তদন্তকারীরাও বিষয়টিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে মনে করছেন।
দিল্লি বিস্ফোরণস্থলে (Delhi Red Fort Blast) উদ্ধার সেনা ব্যবহৃত কার্তুজ
ঘটনাস্থলে ডিউটিতে থাকা পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের গোলাবারুদ মিলিয়ে দেখা হয়েছে। তদন্তকারী দল নিশ্চিত করেছে, উদ্ধার হওয়া কার্তুজ কোনও ডিউটি-ফোর্সের নয়। এতে জল্পনা আরও ঘনীভূত হয়েছে যে, বিস্ফোরণের (Delhi Red Fort Blast) পিছনে আরও কোনও সুগভীর পরিকল্পনা লুকিয়ে আছে কি না।
আরও পড়ুন: ভিড় এড়াতে দার্জিলিংয়ের বদলে ঘুরে আসুন এই তিন শান্ত পাহাড়ি জনপদ
এদিকে বিস্ফোরণের (Delhi Red Fort Blast) অন্যতম অভিযুক্ত ডাঃ উমর নবির সম্পূর্ণ যাত্রাপথ তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সূত্রের খবর, দিল্লি–এনসিআর জুড়ে থাকা ৫ হাজারেরও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে ৪৩টি স্পষ্ট ফ্রেম উদ্ধার হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে তাঁর গাড়ির ফরিদাবাদের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ, দিল্লির দিকে যাত্রা এবং লালকেল্লা পর্যন্ত পৌঁছনোর প্রতিটি ধাপ। এই সিসিটিভি রুটম্যাপই এখন তদন্তের মূল হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এছাড়া বিস্ফোরণস্থল থেকে সংগৃহীত ডিএনএর সঙ্গে উমর নবির মায়ের ডিএনএ মেলানো হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টে মিল পাওয়ায় তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, এতে মামলার প্রাথমিক কাঠামো আরও স্পষ্ট হয়েছে।
লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের গেট নম্বর ১–এর কাছে বিস্ফোরণ ঘটে। বিজ্ঞানী দলের রিপোর্ট অনুসারে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িতে ৩০–৪০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছিল। তবে উদ্ধার হওয়া অন্তত একটি নমুনায় এমন বিস্ফোরকের প্রমাণ মিলেছে, যা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী। এতে তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিস্ফোরণে বহুস্তরীয় বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছিল।

আরও পড়ুন:ট্রাম্পের পরিকল্পনা ফের হল ব্যর্থ? অক্টোবরে রাশিয়া থেকে কত তেল কিনল ভারত?
ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাব (FSL) ঘটনাস্থল থেকে ৪০টিরও বেশি প্রমাণ তুলে এনেছে— যার মধ্যে রয়েছে কার্তুজ, লাইভ রাউন্ড, বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশ এবং গাড়ির ধ্বংসাবশেষ। এই সমস্ত উপাদান পাঠানো হয়েছে বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য, যা তদন্তের পরবর্তী ধাপকে প্রভাবিত করবে।
লালকেল্লার মতো উচ্চ নিরাপত্তা-বলয়ের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন উঠেছে। নতুন পাওয়া তথ্য ও উদ্ধার হওয়া সামগ্রী পুরো মামলাকে আরও জটিল করে তুলেছে, আর তদন্তকারীরা এখন খুঁজে দেখছেন— এই বিস্ফোরণের পেছনে আরও কোনও সংগঠিত চক্র রয়েছে কি না।












