বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Delhi Blast) কাণ্ডের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই নাশকতার নেপথ্যে থাকা তিন অভিযুক্ত—ডাঃ উমর, মুজম্মিল ও শাহিন—২০ লক্ষ টাকার যে বিপুল আর্থিক লেনদেন করেছে, তা হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদের তরফে। এই তথ্য সামনে আসতেই উঠে এসেছে পাকযোগের ইঙ্গিত, যা তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Blast) টাকা যোগানের নেপথ্যে পাক যোগ?
রবিবার গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের (Delhi Blast) আগে হাওয়ালা রুটে ভারতে ঢুকেছিল এই বিশাল অঙ্কের টাকা। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল ২৬ কুইন্টাল এনপিকে সার কেনার জন্য। কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত এই সার—নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাসিয়ামের মিশ্রণে তৈরি—বিস্ফোরক তৈরির উপাদান হিসেবেও পরিচিত। সূত্রের দাবি, এই অর্থ দিয়েই বিস্ফোরকে ব্যবহৃত রাসায়নিক, সরঞ্জাম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করে অভিযুক্তরা।
আরও পড়ুন:মানবদেহে মিলল বার্ড ফ্লুর নতুন H5N5 স্ট্রেইন, নতুন বছরে ফের নতুন মহামারী?
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, হাওয়ালার মাধ্যমে পাওয়া এই টাকা কীভাবে ব্যবহৃত হবে তা নিয়ে উমর ও শাহিনের মধ্যে মতবিরোধও হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে মুজম্মিল তদন্তকারীদের কাছে এই তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি গোয়েন্দা বিভাগের। পাশাপাশি, ২০ লক্ষ টাকা যে হ্যান্ডলারের মাধ্যমে ভারতে পৌঁছেছিল, তার খোঁজে তল্লাশি জোরদার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। তাকে পাকড়াও করা গেলে স্পষ্ট হয়ে যাবে জইশ-ই-মহম্মদই এই হামলার (Delhi Blast) নেপথ্যে, নাকি অন্য কোনও সংগঠন জড়িত।
এদিকে বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ৯ মিমি ক্যালিবারের তিনটি কার্তুজ তদন্তকে আরও রহস্যময় করছে। পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া কার্তুজের মধ্যে দুটি তাজা ও একটি খালি। সাধারণ পরিস্থিতিতে এই ধরনের গোলাবারুদ কেবলমাত্র সেনাবাহিনী ও নির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীই ব্যবহার করে। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র বা অস্ত্রাংশ না মেলায় প্রশ্ন উঠছে এই কার্তুজ সেখানে এল কীভাবে।

আরও পড়ুন: লালকেল্লা বিস্ফোরণ স্থলে মিলল সেনা-ব্যবহৃত ৯ মিমি কার্তুজ, বাড়ছে রহস্যের ঘনঘটা
একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, ঘটনাস্থলে থাকা কোনও কর্মকর্তা বা নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্রের সঙ্গেও এই কার্তুজের কোনও মিল পাওয়া যায়নি। ফলে কার্তুজ উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরণ তদন্তকে আরও জটিল করে তুলেছে। তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এখন বিস্ফোরণের আর্থিক যোগ, ব্যবহৃত বিস্ফোরকের উপাদান, রুটম্যাপ এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসযোগ—সবকিছুকে একসঙ্গে মিলিয়ে চিত্রটি পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে।
গোটা ঘটনায় যে সীমান্তের ওপার থেকে নাশকতার ছক কষা হয়েছিল, তা আরও জোরালোভাবে সামনে আসছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই মিলছে নতুন নতুন প্রমাণ, যা প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানযোগকে ইঙ্গিত করছে।












