বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লি বিস্ফোরণ (Delhi Blast) মামলায় ‘হোয়াইট কলার টেররিস্ট’-দের গ্রেপ্তারি পর্ব অব্যাহত রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আটক করা হল হরিয়ানার এক মহিলা চিকিৎসককে। জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার মালাকনাগ এলাকা থেকে ধরা পড়েছেন ওই চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা শর্মা। তিনি সেখানে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। তার ঘর থেকে একটি মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ড উদ্ধার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণ মামলায় আগেই গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত আদিলের জেরায় উঠে আসে প্রিয়াঙ্কার নাম। এরপরই তদন্তকারীরা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এদিকে হরিয়ানার একটি বিশেষ দল অনন্তনাগে পৌঁছচ্ছে বলে জানা গেছে, যাতে ধৃত চিকিৎসকের অতীত এবং সম্ভাব্য জঙ্গি যোগাযোগ খতিয়ে দেখা যায়।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Blast) কাশ্মীর থেকে ধৃত মহিলা চিকিৎসক
এদিকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই হামলার নেপথ্যে থাকা তিন চিকিৎসক—উমর, মুজম্মিল এবং শাহিন—এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ‘মানি ট্রায়াল’ ধরা পড়েছে, যা হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে পাকিস্তান-সমর্থিত জইশ-ই-মহম্মদের তরফে পাঠানো হয়েছিল। এর ফলে বিস্ফোরণ (Delhi Blast) মামলায় পাকযোগ আরও স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে জঙ্গি চক্রে ‘হোয়াইট কলার’ পেশাজীবীদের সক্রিয় ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:মাওবাদী দমনে জোরদার অভিযান, সুকমায় খতম কুখ্যাত তিন জঙ্গি, মাথার দাম কত ছিল জানেন?
ফরেনসিক তদন্তেও মিলেছে নতুন তথ্য। এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল, হামলায় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু ফরেনসিক দল মনে করছে, বিস্ফোরণে (Delhi Blast) ব্যবহৃত হয়েছে ‘শয়তানের মা’ নামে পরিচিত মারাত্মক বিস্ফোরক ট্রায়াকিটোন ট্রাইপারক্সাইড (TATP)। আইএসআইএস-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের ব্যবহৃত এই বিস্ফোরক অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সহজে ধ্বংসাত্মক ক্ষতি করতে সক্ষম। ফলে হামলার প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার পেছনে উচ্চমাত্রার প্রশিক্ষণ ও সংগঠিত জঙ্গি নেটওয়ার্কের ছায়া রয়েছে বলেই ধারণা তদন্তকারীদের।
উল্লেখ্য, দিল্লি বিস্ফোরণে ইতিমধ্যেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত। যদিও সরকারিভাবে ঘটনাটিকে এখনো জঙ্গি হামলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি, তবুও তদন্তের গতিপথ স্পষ্টভাবেই সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই হামলার ষড়যন্ত্রকারীদের কাউকেই ছাড়া হবে না এবং কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: মাওবাদী দমনে জোরদার অভিযান, সুকমায় খতম কুখ্যাত তিন জঙ্গি, মাথার দাম কত ছিল জানেন?
রবিবার দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণস্থল থেকে ৯ মিমি ক্যালিবারের তিনটি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে দুটি তাজা এবং একটি খালি। সাধারণত এই ধরনের কার্তুজ সেনাবাহিনীর ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট এবং অসামরিক ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে ঘটনার স্থানে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র বা ব্যবহৃত অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, হামলাকারীরা অত্যন্ত সুচিন্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে সব প্রমাণ মুছে ফেলেছে।
দিল্লি বিস্ফোরণ মামলায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং উদ্ধার হওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত দ্রুত এগোচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ মনে করছে, এই নেটওয়ার্কের মূল চক্র ধরতে পারলেই সামনে আসবে আরও বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং পুরো ষড়যন্ত্রের জাল।












