বিশ্ববিদ্যালয় নাকি জঙ্গি তৈরির প্রতিষ্ঠান? দিল্লি বিস্ফোরণের পরেই আল-ফালাহ ছাড়ছেন অধ্যাপক-পড়ুয়ারা

Updated on:

Updated on:

Students are leaving Al-Falah University.
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্ক: দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ফরিদাবাদের আল ফালাহ ইউনিভার্সিটি (Al-Falah University) । চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ থাকায় প্রতি বছর দেশজুড়ে বহু ছাত্র-ছাত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসেন। কিন্তু তদন্ত এগোতেই সামনে এসেছে এমন সব তথ্য, যা অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি করেছে। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে গোপনে চলত মগজধোলাই, চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়ানো এবং জঙ্গি কার্যকলাপের প্রস্তুতি—যা এতদিন কারও নজরে পড়েনি।

দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে নজরে আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় (Al-Falah University):

গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহে ভর করে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার হিড়িক। বিশ্ববিদ্যালয় (Al-Falah University) সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দুই দিনে অন্তত ৪৫ জন ডাক্তারি পড়ুয়া এবং কয়েকজন অধ্যাপক প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে গিয়েছেন। অনেকেই টিসি চেয়ে আবেদন করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে বহু চিকিৎসা পড়ুয়ার পরিবার নিজেরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সন্তানদের বাড়ি নিয়ে আসেন। অভিভাবকদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তদন্তের গতি দেখে তাঁদের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আরও বড় কোনও তথ্য সামনে আসতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: হাজার কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে খরচ! বাংলায় বিজেপির নির্বাচনী বাজেট বাড়ালেও হিসেবের রাশ কেন্দ্রের হাতেই

বিস্ফোরণে নিহত মূল অভিযুক্ত চিকিৎসক উমর নবি-সহ তিন চিকিৎসক আদিল, মুজাম্মিল এবং শাহিনের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের (Al-Falah University) যোগ ছিল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের ঘরেই বৈঠক হত, যেখানে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শহরে হামলার ছক নিয়ে আলোচনা চলত। সেই বৈঠকে থাকতেন উমর এবং তাঁর সহযোগীরা। তাঁদের কাছে টাকা আসত কোথা থেকে, কারা পাঠাত—তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযানে নামে ইডি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, প্রশাসনিক দপ্তরসহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথি ও ডিজিটাল তথ্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

ইডির তদন্তেই উঠে এসেছে আরও বড় তথ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জাওয়াদ আহমেদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে জঙ্গি মডিউলকে সাহায্য করার অভিযোগ মিলেছে। দীর্ঘ তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই তৈরি হয়েছিল একটি গোপন নেটওয়ার্ক, যেখানে চিকিৎসকদের মাধ্যমেই ছড়ানো হত চরমপন্থী মতবাদ এবং তৈরি হত হামলার নীলনকশা।

Students are leaving Al-Falah University.

আরও পড়ুন: ‘আপনারা আদালত অবমাননার মামলা করুন’, কড়া পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির, কোন মামলায়?

এনআইএ, ইডি এবং স্থানীয় পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ফলে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের মধ্যে। তদন্তকারীদের মতে, আরও তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই চক্র কতটা বিস্তৃত ছিল, তা জানতে তদন্ত আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।