বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে নয়া মোড়। এবার তদন্তের পরিধি বাড়িয়ে পৌঁছে গেল জম্মুতে (Jammu and Kashmir) । বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্টেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এসআইএ) হানা দেয় রেসিডেন্সি রোডে অবস্থিত ‘কাশ্মীর টাইমস’ সংবাদপত্রের অফিসে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, তারা অফিস থেকে উদ্ধার করেছে একে রাইফেলের একাধিক কার্তুজ, পিস্তল, হ্যান্ড গ্রেনেডের পিন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং ডিজিটাল ডিভাইস। দিল্লির বিস্ফোরণ, লালকেল্লায় গাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং জইশ-ই-মহম্মদের ‘ডাক্তার জঙ্গি’ চক্রের তদন্তেই এই তল্লাশি বলে জানা গিয়েছে।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) টাইমসে হানা
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) টাইমসের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে, যেখানে অভিযোগ তোলা হয়েছে ‘দেশবিরোধী লেখা’ প্রকাশের। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই জম্মু অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাজেয়াপ্ত করা নথি এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলিকে ফরেনসিকভাবে খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, সংবাদপত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে দাপট ভারতে তৈরি অস্ত্রের! সমস্ত রেকর্ড ভাঙল দেশের প্রতিরক্ষা উৎপাদন, জানলে হবে গর্ব
ঘটনার পর উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুরিন্দর সিং চৌধুরী মন্তব্য করেন, অন্যায় প্রমাণিত হলে তবেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) টাইমসের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলা হয়েছে, এই অভিযোগের নামে একটি স্বাধীন ও সমালোচনামূলক গণমাধ্যমকে দমন করার চেষ্টা চলছে। সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি তাদের সম্পাদকীয় স্বাধীনতার উপর সরাসরি আঘাত।
উল্লেখ্য, এটাই প্রথম নয়। এর আগে ‘দেশবিরোধী লেখা’ প্রকাশের অভিযোগে ২০২০ সালে শ্রীনগরের প্রেস এনক্লেভে অবস্থিত কাশ্মীর টাইমসের দফতরে তল্লাশি চালানো হয়েছিল এবং অফিস কিছু সময়ের জন্য সিলও করা হয়। সাম্প্রতিক কয়েক মাস পত্রিকাটির প্রকাশনা এবং বিক্রি অনিয়মিত ছিল বলেও জানা যায়। উল্লেখযোগ্য, ২০১৯ সালে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বিলোপের পর ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন এই পত্রিকার সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন।

এই তল্লাশি অভিযানের পেছনে রয়েছে দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের দ্রুত গতির তদন্ত। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে একাধিক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে, যাঁরা অধিকাংশই কাশ্মীরের বাসিন্দা এবং ‘ডাক্তার জঙ্গি’ নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ। ধরা পড়েছে বিস্ফোরণের দুই মূল ষড়যন্ত্রীও। তদন্তকারীদের নজরে এসেছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে বিস্ফোরণের দিনই মজুত ছিল বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে উমর—এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের একাংশের।
ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ‘হোয়াইট কলার টেরর’-এর জাল আগের ধারণার থেকেও অনেক বিস্তৃত। দিল্লি বিস্ফোরণ তদন্তে কাশ্মীর টাইমসের অফিসে হানা সেই জটিল তদন্তেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।












