বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার আরও শক্তি বাড়ল ভারতীয় নৌবাহিনীর। সোমবার মুম্বাইয়ে সাবমেরিন-বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ INS মাহে (INS Mahe) নৌবাহিনীতে (Indian Navy) শামিল হয়েছে। এই নতুন “সাবমেরিন হান্টার” গভীর এবং অগভীর উভয়ক্ষেত্রেই শত্রু সাবমেরিন শনাক্ত এবং ধ্বংস করতে সক্ষম। “আত্মনির্ভর ভারত” উদ্যোগের অধীনে ৮০ শতাংশ দেশীয় উপাদান দিয়ে নির্মিত, INS মাহে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি বাড়িয়ে শামিল হল ‘সাইলেন্ট কিলার’ INS মাহে (INS Mahe):
মূলত, আরব সাগর থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত ভারতের সামুদ্রিক সীমানার প্রতিটি ক্ষেত্রে নজর দাড়ি রাখার লক্ষ্যে ভারতীয় নৌ-বাহিনী আরও শক্তিশালী হল। ২৪ নভেম্বর সকালে মুম্বাইয়ের নৌ ডকইয়ার্ডে এই অত্যাধুনিক ASW ক্রাফট জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। এর মাধ্যমে, প্রথম মাহে- ক্লাস সাবমেরিন হান্টার আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জলসীমা রক্ষায় মোতায়েন করা হবে।

জানিয়ে রাখি যে, কোচিন শিপইয়ার্ডে নির্মিত, এই যুদ্ধজাহাজটি কেবল প্রযুক্তিগত দিক থেকেই এক বিস্ময় নয়, বরং এটি ৮০ শতাংশেরও বেশি দেশীয় সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের বার্তাও গুরুত্ব পেয়েছে। এদিকে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী জানান যে, মাহে-র কমিশনিং দেশীয় অগভীর জলে যুদ্ধজাহাজের নতুন প্রজন্মের আগমনকে চিহ্নিত করে। ৮০ শতাংশেরও বেশি দেশীয় উপকরণ সহ, মাহে-ক্লাস যুদ্ধজাহাজের ডিজাইন, নির্মাণ এবং সংযুক্তিকরণে ভারতের ক্রমবর্ধমান দক্ষতা প্রদর্শন করে। এই যুদ্ধজাহাজ পশ্চিম সমুদ্র উপকূলে একটি ‘সাইলেন্ট হান্টার’ হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও, এটি স্বাধীনভাবে কাজ করার পাশাপাশি ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তায় অনবরত নজর রাখবে।
আরও পড়ুন: প্রথম ব্লাইন্ড ওমেন্স T20 বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন! ভারতের মেয়েদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
২০২৯ সালের মধ্যে ভারতীয় নৌবাহিনী আরও শক্তিশালী হবে: জানিয়ে রাখি যে, INS মাহে ৭৮ মিটার লম্বা এবং প্রায় ১,১৫০ টন ওজনের। এটি ভারতের নতুন সাবমেরিন কিলার। যা চোখের পলকে জলে নিচে থাকা হুমকি দূর করতে সক্ষম হবে। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য মোট ১৬ টি মাহে-ক্লাস ASW জলযান তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ৮ টি জাহাজ সম্পূর্ণরূপে অ্যান্টি সাবমেরিন স্পেশালাইজড হবে। INS মাহে ওই সিরিজের প্রথম যুদ্ধজাহাজ। এই ক্লাসের নতুন জাহাজ প্রতি ৬ মাস অন্তর নৌবাহিনীতে সরবরাহ করা হবে। এর ফলে, ২০২৯ সালের মধ্যে সমস্ত জাহাজ পরিষেবায় যোগদান করবে। জানিয়ে রাখি যে, এই যুদ্ধজাহাজটি পুরনো অভয়-ক্লাস করভেটকে প্রতিস্থাপন করতে চলেছে। এই পদক্ষেপ ভারতের সমুদ্রসীমার যুদ্ধে, অর্থাৎ উপকূলীয় সামুদ্রিক নিরাপত্তায় একটি পরিবর্তনশীল পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: একের পর এক বিপর্যয়! বাবার পর হাসপাতালে ভর্তি হতে হল স্মৃতির হবু স্বামীকে, এখন কেমন আছেন পলাশ?
মাহে-র বিশেষত্ব: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,INS মাহে-র সবচেয়ে বড় শক্তি হল এর ডুয়েল-সোনার ক্ষমতা। একটি গভীর জলের জন্য এবং একটি অগভীর জলের জন্য। এর অর্থ হল শত্রু সাবমেরিন গভীর জলে বা উপকূলের কাছাকাছি লুকিয়ে থাকুক না কেন, INS মাহে সেটি শনাক্ত করতে সক্ষম। যুদ্ধজাহাজটি আধুনিক ডিটেকশন সিস্টেম, ২ টি সোনার এবং উন্নত সেন্সর দিয়ে সজ্জিত। এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে যেকোনও ভূ-পৃষ্ঠের হুমকি ট্র্যাক, লক এবং নিষ্ক্রিয় করতে পারবে। INS মাহে কেবল একটি যুদ্ধজাহাজ নয়, বরং ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন চোখ এবং কান। যা জলের নিচে লুকিয়ে থাকা যেকোনও শত্রুকে শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও, এই যুদ্ধজাহাজে কম শব্দের ডিজেল ইঞ্জিন এবং ওয়াটার জেট প্রপালশন এটিকে স্টিলথ, গতি এবং নির্ভুলতার নিখুঁত সমন্বয় প্রদান করে। ১৪ নট গতিতে ১,৮০০ নটিক্যাল মাইল পরিসীমা এবং উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত স্বাধীনভাবে টহল পরিচালনা করার ক্ষমতাও রয়েছে এই যুদ্ধজাহাজের।












