বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশে পুশব্যাক হওয়া বীরভূমের সোনালি খাতুন ও তাঁর পরিবারকে অবিলম্বে ভারতে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশ দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মানবিকতার প্রেক্ষিতে এই পরিবারকে ফিরিয়ে আনা জরুরি।
হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র
বাংলাদেশ থেকে সোনালি খাতুন ও তাঁর পরিবারকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যায় কেন্দ্র সরকার। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে ওঠে এই মামলা। শুনানির শুরুতেই আদালত জানিয়ে দেয় যে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ হিসেবে ওই পরিবারকে দেশে ফেরানোই এখন অগ্রাধিকার।
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল আদালতে বলেন, তাঁরা প্রস্তুত নন এবং আরও সময় প্রয়োজন। কিন্তু প্রধান বিচারপতির স্পষ্ট মন্তব্য করে বলেন তালিকাভুক্ত মামলার শুনানি এড়ানোর সুযোগ নেই। জন্মের শংসাপত্র-সহ নথি সোনালিদের ভারতের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠা করছে। আদালত (Supreme Court) জানায়, অভিবাসন সংক্রান্ত প্রশ্ন পরে খতিয়ে দেখা হবে। আপাতত তাঁদের ফিরিয়ে আনা জরুরি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার। ভদু শেখ ও আমির খানের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন কপিল সিব্বল।
প্রসঙ্গত, ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে সোনালি খাতুন-সহ মোট পাঁচজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের কারাগার থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। কেন্দ্র ২২ অক্টোবর আবেদন করলেও ২৪ অক্টোবর চার সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার পরও ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী জানান, উচ্চতর আদালতে যাওয়ার অধিকার থাকলেও এখানে একজন গর্ভবতী মহিলা ও দুই শিশুর বিষয় জড়িত থাকায় দ্রুত সমাধান আশা করা হয়েছিল। হেবিয়াস কর্পাস আবেদনে সোনালির বাবা ভদু শেখ জানান, মেয়েটি তখন আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
কোথা থেকে শুরু হয় ঘটনা?
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন দিল্লির রোহিণী থেকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে আটক হন সোনালি, তাঁর স্বামী দানিশ শেখ, তাঁদের ৮ বছরের ছেলে সাবির, এবং সুইটি বিবি-সহ আরও দুই শিশু। ২৬ জুন ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO) দেশছাড়া করার নির্দেশ দেয়। সেদিনই তাঁদের বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হয়। ২১ অগাস্ট বাংলাদেশে তাঁদের ‘অবৈধ প্রবেশ’-এর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা সেখানকার কারাগারে বন্দি।
কলকাতা হাইকোর্ট বলেছিল ভদু শেখ বীরভূমের বাসিন্দা, সোনালির জন্মও সেখানেই। তাই তাদের দেশ ফেরানোর নির্দেশ দেয় আদালত। তবে কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিসের দাবি ছিল এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এখতিয়ার নেই।

আরও পড়ুনঃ ধর্ম নিয়ে নজিরবিহীন বিতর্ক! খ্রিস্টান অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট
ASG অশোক কুমার চক্রবর্তী জানান, ভদু শেখ গোপন করেছিলেন যে দিল্লি হাইকোর্টে একই বিষয়ে দুটি মামলা বিচারাধীন ছিল। তবে এখন বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে, এবং সেখান থেকেই তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।












