বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে (Imran Khan) ঘিরে নতুন করে ছড়িয়েছে তীব্র জল্পনা। দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে রাওয়ালপিণ্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি তিনি। হঠাৎই গত দু’দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় টপ ট্রেন্ড হয়ে ওঠে একটি দাবি—জেলের মধ্যেই নাকি খুন করা হয়েছে তাঁকে। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্ভরযোগ্য সংবাদ সংস্থা বা সরকারি সূত্র কোনওরকম নিশ্চিত তথ্য দেয়নি। প্রথমে ‘আফগান টাইমস’ নামে এক এক্স হ্যান্ডল থেকে ইমরানের মৃত্যুর দাবি করা হয়। এরপর আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্ট সেই দাবি ছড়াতে শুরু করলে জল্পনা দ্রুত তীব্র হয়। ঘটনার উৎস খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে বাধা এবং তাঁকে আলাদা সেলে রেখে দেওয়াকেই এই গুঞ্জনের ভিত্তি বলা হচ্ছে।
পাক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের (Imran Khan) মৃত্যু নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
গত সপ্তাহে ইমরানের (Imran Khan) সাপ্তাহিক সাক্ষাতের নির্ধারিত দিন তাঁর বোনেরা জেলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এই সিদ্ধান্তেই উত্তেজনা শুরু হয়। ওই তিন বোন—আলেমা খান, উজমা খান এবং নওরিন খান—জেলের বাইরে টানা দশ ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। তাঁদের দাবি, কোনও কারণ না জানিয়ে তাঁদের ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, জেলের বাইরে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের ক্ষোভ এবং এই ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ঠিক এই সময় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার নানা মহলে ইমরানকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন:খসড়া তালিকায় তথ্য সংশোধনে বাধ্যতামূলক আধার কার্ড, বড় আপডেট কমিশনের
বুধবার আদিয়ালা জেলের বাইরে পিটিআই সমর্থকদের বড়সড় প্রতিবাদও হয়। কিন্তু তাঁদেরও ইমরানের (Imran Khan) অবস্থান বা স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। কারওকেই দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতেই বাড়ছে জল্পনা—যদি ইমরান খান জীবিত থাকেন, তবে কোথায় তিনি? কেন তিন সপ্তাহ ধরে পরিবারের কোনও সদস্যই তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না? পিটিআই প্রধানের পরিবার জানিয়েছেন, তাঁরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন কারণ দীর্ঘদিন ধরে ইমরানকে অমানবিক অবস্থায় রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। পরিবার ও সমর্থকদের প্রশ্ন, যদি সব ঠিক থাকে, তবে স্বাভাবিক সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া বন্ধ কেন?
ইমরান খানের (Imran Khan) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি এবং আর্থিক অনিয়ম-সহ একাধিক মামলায় তদন্ত চলছে। এই মামলাগুলির জেরে তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে বন্দি। দীর্ঘদিন ধরেই পিটিআই শীর্ষ নেতৃত্ব এবং পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে আসছেন যে তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে আলাদা করে রাখা হয়েছে এবং কোনও রকম মানবিক পরিবেশ দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা দাবি করেন, ইমরান খানের ওপর চাপ তৈরি করতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। তবে পাকিস্তান সরকারের তরফে এ নিয়ে কোনও স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া বা জবাব মেলেনি।

এই সমস্ত ঘটনার জেরে ইমরান খানের (Imran Khan) ‘মৃত্যু’ সংক্রান্ত গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। পরিবার, আইনজীবী এবং সমর্থকদের দাবি, সরকারের উচিত অবিলম্বে ইমরান খানের নিরাপত্তা এবং শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য প্রকাশ করা। না হলে এই ধরনের জল্পনা, আতঙ্ক এবং ক্ষোভ আরও বাড়বে। তবে সরকার বা জেল কর্তৃপক্ষের নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে তাই প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে—ইমরান খান সত্যিই কি নিরাপদ? নাকি এই নীরবতার আড়ালে আরও বড় কোনও ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে?












