‘১৫ দিনের মধ্যে…’, TMC প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ না নেওয়ার মথুরাপুরের ওসিকে শোকজ হাইকোর্টের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উঠেছে পঞ্চায়েতের উন্নয়নের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ! তারপরও মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate) বাপি হালদার এবং তার স্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিলি হালদারের বিরুদ্ধে কেন এফআইআর দায়ের হল না? দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন কোনো পদক্ষেপ নয়? চরম ক্ষুব্ধ আদালত। শাসকদলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ার অভিযোগে এবার মথুরাপুর থানার ওসিকে (Mathurapur OC) শো-কজ় করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদার এবং তার স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতের উন্নয়নের টাকা কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বর্তমান বিজেপি প্রধান অনুপকুমার মিস্ত্রি। বিজেপি নেতার দাবি, হালদার দম্পতির বিরুদ্ধে দিনের পর দিন একাধিক অভিযোগ পেয়েও হাত-পা গুটিয়ে বসে রয়েছে পুলিশ। কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

   

বিজেপি প্রধান অনুপকুমার মিস্ত্রির আরও অভিযোগ, ওই প্রার্থী আর তার স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার এক মাস পরও এফআইআর দায়ের করেননি পুলিশ। এরপরই অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। এই মামলাতেই এবার মথুরাপুর থানার ওসিকে শোকজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।

শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, “অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বিষয়টি বিডিও দেখছেন।” এরপরই ওসির ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, “হঠাৎ অনুসন্ধান কেন? আর এখানে বিডিও এখানে আসছেন কোথা থেকে? কোর্ট কেন অর্ডার দেবে? প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে অনুসন্ধান কেন?” বিচারপতির মুখে উঠে আসে ভূপতিনগর প্রসঙ্গও।

ভূপতিনগর কাণ্ডে এফআইআর ইস্যু তুলে বিচারপতি বলেন, “আপনারা ভূপতিনগরের ক্ষেত্রে ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান না করেই এফআইআর করে দিলেন। আর এখানে পুলিশ অনুসন্ধান করার যুক্তি দেখিয়ে এই রকম অপরাধমূলক অভিযোগ ঝুলিয়ে রেখেছে।’’

আরও পড়ুন: এবার গ্রেফতার হবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব-স্বরাষ্ট্রসচিব? দাড়িভিট হত্যা মামলায় বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের

বিচারপতির হুঁশিয়ারি, ‘এক মাসেরও বেশি সময় আগে অভিযোগ করা হয়েছে। তথ্য নথি নষ্ট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এটা চেষ্টা নয়! যদি মনে হয় অভিযোগে অপরাধের কোনো ইঙ্গিত নেই, তাহলে খোলা এজলাসে অভিযোগ পড়ুন।” অভিযোগ ছিল, কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিলি হালদার একই জায়গায় বার বার কাজের বরাত দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন কিন্তু আদতে কোনো কাজই হয়নি।

অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর তো দূর, উল্টে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। মামলার তদন্তভার সিবিআই এবং ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন মামলাকারী অনুপ। এদিন ওসিকে ১৫ দিনের মধ্যে এফআইআর না করে অভিযোগ ফেলে রেখে দেওয়ার কারণ জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। পাশাপাশি অভিযোগকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুন্দরবন জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ৬ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর