বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের শ্রেষ্ঠ ধনকুবের মুকেশ আম্বানির নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (Reliance Industries) তাদের সর্ববৃহৎ মনিটাইজেশন সাইকেল শুরু করছে। করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর পর কোম্পানিটি প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং ব্রোকারেজ এবং বিনিয়োগকারীরা এখন এই বিষয়টিকে চতুর্থ মনিটাইজেশন ওয়েভ হিসেবে বিবেচিত করছেন। আসলে, এই কোম্পানির এখন কোনও উল্লেখযোগ্য ঋণের বোঝা নেই এবং একটি শক্তিশালী ব্যালেন্স শিটও রয়েছে। বর্তমানে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের ফোকাস শুধুমাত্র 5G, AI-চালিত ডেটা সেন্টার, গ্লোবাল রিফাইনিং এবং নিউ এনার্জির দিকে রয়েছে।
যা অপারেটিং ক্যাশ-ফ্লোকে চালিত করবে।
বিনিয়োগকারীদের মালামাল করতে পারে রিলায়েন্স (Reliance Industries):
চতুর্থ মনিটাইজেশন ওয়েভের উল্লেখযোগ্য দিক: ইতিমধ্যেই ET মরগান স্ট্যানলির একজন বিশ্লেষককে উদ্ধৃত করে বলেছে যে এই চতুর্থ মনিটাইজেশন ওয়েভ গত ৩০ বছরে রিলায়েন্সের চতুর্থ বৃহৎ মনিটাইজেশন সাইকেল। টেলিকম থেকে শুরু করে রিটেল এবং অয়েল-টু-কেমিক্যালসের এর মতো সেক্টরে এই বিনিয়োগ ২০২৬ সাল থেকে কোম্পানিকে উল্লেখযোগ্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে। ক্যাপেক্স বৃদ্ধি সত্ত্বেও, এবার নিট ঋণের ওপর কোনও চাপ থাকবে না। এর অর্থ হল রিলায়েন্স তার বিনিয়োগ থেকে সরাসরি ক্যাশ-ফ্লো-তে রিটার্ন পেতে পারে।

* রিটেল: কুইক কমার্স এবং নিজস্ব লেবেল: জানিয়ে রাখি যে, রিটেল সেক্টরে রিলায়েন্স তার স্টোরগুলিকে আপডেট করেছে এবং কুইক কমার্স ও নিজস্ব ব্র্যান্ডেড পণ্যের ওপর মনোনিবেশ করেছে। মরগান স্ট্যানলির মতে, রিটেল সেক্টরে রাজস্ব ২০২৭ অর্থবর্ষের মধ্যে প্রায় ৩.৯ লক্ষ কোটিতে পৌঁছতে পারে। এদিকে, EBITDA বৃদ্ধি প্রায় ১০০ শতাংশের কাছাকাছি হবে। যেটি দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানিগুলির জন্য একটি স্থিতিশীল এবং লাভজনক সেক্টর হতে চলেছে।
* Jio: ডিজিটাল এবং 5G আধিপত্য: Jio-র এখন প্রধান মনোযোগ রয়েছে কোয়ালিটি সাবস্ক্রাইবার থেকে শুরু করে, ট্যারিফ বৃদ্ধি এবং ফিক্সড ওয়্যারলেস ব্যবহারকারীদের ওপর। ২০২৭ অর্থবর্ষের মধ্যে, Jio-র ব্লেন্ডেড ARPU প্রতি মাসে প্রায় ২৩৬ টাকায় পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়াও, আসন্ন IPO এবং হোম ব্রডব্যান্ড বাজারে এর ক্রমবর্ধমান বিস্তার কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো-কে আরও শক্তিশালী করবে। Jio-র ডিজিটাল ব্যবসা 5G প্রযুক্তি এবং এন্টারপ্রাইজ মার্কেট থেকে দ্রুত লাভবান হতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: GST হ্রাসের ইতিবাচক প্রভাব! শুধুমাত্র নভেম্বরেই সরকারের কোষাগারে এল ১.৭০ লক্ষ কোটি টাকা
* নিউ এনার্জি এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স; ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি: জানিয়ে রাখি যে, চতুর্থ মনিটাইজেশন ওয়েভের সবচেয়ে ফিউচারিস্টিক দিক হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স তথা AI এবং নিউ এনার্জির ইন্টিগ্রেশন। রিলায়েন্স ১০ গিগাওয়াট সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং চেন, ব্যাটারি, গ্রিন হাইড্রোজেন এবং AI সাপোর্টেড পাওয়ার সলিউশনের ক্ষেত্রে বিস্তৃত হচ্ছে। এছাড়াও, AI ডেটা সেন্টারে GPU-এজ-এ-সার্ভিস মডেলের মাধ্যমে কোম্পানিটি ক্লিন এনার্জিতে হাই রিটার্ন এবং স্থিতিশীলতা অর্জন করবে। এই নতুন এনার্জি ভেঞ্চার থেকে প্রথম রেভিনিউ ২০২৭ অর্থবর্ষে মিলবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
* গ্লোবাল রিফাইনিংয়ে নতুন মোড়: জানিয়ে রাখি যে, রিলায়েন্স গ্লোবাল রিফাইনিংয়ে একটি নতুন ‘স্বর্ণযুগ’ দেখতে পারে। কম নতুন বিনিয়োগ এবং বর্তমান সক্ষমতা সহ, এই সেক্টরটি ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতি ব্যারেল ১১-১২ ডলারের গ্রস মার্জিন প্রদান করতে পারে। রিফাইনিং ছাড়াও, কেমিক্যালের ক্ষেত্রে চিনের সাপ্লাই সাইড রিফর্ম এবং রিকভারি কোম্পানির মার্জিন স্থিতিশীল করবে।
আরও পড়ুন: টেস্ট ক্রিকেটে করতে চলেছেন প্রত্যাবর্তন? রাঁচিতে সেঞ্চুরির পর কোহলি করলেন ‘বিরাট’ ঘোষণা
RIL-এর জন্য মরগান স্ট্যানলির লক্ষ্য: ব্রোকারেজ ফার্ম মরগান স্ট্যানলি চতুর্থ মনিটাইজেশন ওয়েভের
ওপর ভিত্তি করে RIL-কে ওভারওয়েট রেটিং দিয়েছে এবং এর টার্গেট প্রাইস ১,৭০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রোকারেজটি বিশ্বাস করে যে, নতুন বিনিয়োগগুলি গ্রুপের নিট অ্যাসেট ভ্যালু এবং ক্যাশ-ফ্লো প্রোফাইলকে শক্তিশালী করবে। রিফাইনিং মার্জিন প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হলে এবং ডিজিটাল ও নিউ এনার্জি প্ল্যাটফর্মগুলি দ্রুত মনিটাইজ হলে রিটার্ন আরও বেশি হতে পারে।












