নকশাল জোনে বীরত্ব দেখিয়ে ইতিহাস রচনা রিয়েল লাইফ নায়িকার, স্টুডেন্ট থেকে সুপার কপ—অঙ্কিতার জার্নি সিনেমার থেকেও রোমাঞ্চকর

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: আইপিএস অঙ্কিতা শর্মার সাফল্যের কাহিনি (Success Story) আজকের দিনে নারীশক্তির উত্থানের একেবারে যোগ্য একটি উদাহরণ। ইউনিয়ন সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা বা ইউপিএসসি দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত। তিন ধাপের এই পরীক্ষা—প্রিলিমস, মেইনস এবং ইন্টারভিউ—পেরিয়ে আইএএস, আইপিএস, আইএফএসের মতো মর্যাদাপূর্ণ পদে পৌঁছনো বহু তরুণের স্বপ্ন। প্রতি বছর লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসেন, কিন্তু সবার পক্ষে তা পেরোনো সম্ভব হয় না। দীর্ঘদিনের পরিশ্রম, ধৈর্য ও আত্মনিবেদনই এখানে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এমনই এক অনুপ্রেরণামূলক সাফল্যের গল্প লিখেছেন ছত্তিশগড়ের ডুর্গের মেয়ে অঙ্কিতা শর্মা, যিনি ২০১৮ সালের ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় অল ইন্ডিয়া র‌্যাঙ্ক (AIR) ২০৩ অর্জন করে আইপিএস হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরে নকশালবিরোধী অভিযানে বীরত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মানও পান।

আইপিএস অঙ্কিতা শর্মার সাফল্যের কাহিনি (Success Story)

৩৪ বছর বয়সি অঙ্কিতা শর্মার জন্ম ছত্তিশগড়ের দুর্গ জেলায়। তাঁর বাবা রাকেশ শর্মা একজন ব্যবসায়ী এবং মা সবিতা শর্মা গৃহিণী। অঙ্কিতার পড়াশোনার শুরু ডুর্গের সেন্ট জেভিয়ার্স সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে, যেখানে তিনি দশম শ্রেণিতে ৯২ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯০ শতাংশ নম্বর অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ছত্তিশগড়েই স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর ভিলাইয়ের ছত্তিশগড় স্বামী বিবেকানন্দ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং সেখানে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত হন, যা তাঁর একাডেমিক কৃতিত্বকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে (Success Story)।

আরও পড়ুন: তালাক দিলে যৌতুকের যাবতীয় সম্পত্তিও দিতে বাধ্য স্বামী, মুসলিম মহিলার পক্ষে বিরাট নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

এমবিএ করার সময় থেকেই অঙ্কিতার মনে ইউপিএসসি-র প্রতি আগ্রহ জন্মায়। তিনি স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে দিল্লিতে গিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। কিন্তু কিছু ব্যক্তিগত কারণে তাঁকে পরে ছত্তিশগড়ে ফিরে এসে নিজ শহরেই প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হয়। তাঁর অপশনাল বিষয় ছিল পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। প্রথম দুই প্রচেষ্টায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি—প্রথমবার প্রিলিমস পেরোলেও মেইনসে ব্যর্থ হন এবং দ্বিতীয়বার প্রিলিমসেই আটকে যান। টানা ব্যর্থতা হতাশা তৈরি করলেও অঙ্কিতা হাল ছাড়েননি, বরং আরও দৃঢ় মনোবল নিয়ে ফের প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন (Success Story)।

অবশেষে তৃতীয় প্রচেষ্টায় তাঁর সমস্ত পরিশ্রম সফল হয়। ২০১৮ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় তিনি AIR ২০৩ অর্জন করেন। মেইনসে তাঁর মোট নম্বর ছিল ৮৬৭ এবং ইন্টারভিউতে পান ১৬৮, অর্থাৎ মোট ১০৩৫ নম্বর নিয়ে তিনি আইপিএস হয়ে ওঠেন। ছত্তিশগড় ক্যাডারের অফিসার হিসেবে যোগদান করার পর তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ নকশালপ্রবণ এলাকায় একাধিক সফল অভিযান পরিচালনা করেন। তাঁর নেতৃত্ব ও সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘ইন্দ্র ভূষণ পুরস্কার’ প্রদান করা হয়, যা তাঁর কর্মদক্ষতার এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি (Success Story)।

IPS Ankita Sharma's Success Story will inspire you.

আরও পড়ুন:পুতিনের ভারত সফরের আগে বড় বার্তা! ভারত-রাশিয়ার নয়া সামরিক চুক্তিতে সবুজ সংকেত মস্কোর

বর্তমানে অঙ্কিতা শর্মা খৈরাগড়-ছুইখাদান-গন্ডাই জেলার পুলিশ সুপার (SP) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর দৃঢ়তা, শৃঙ্খলা ও নিষ্ঠা তাঁকে দেশের অন্যতম অনুপ্রেরণাদায়ী নারী অফিসারদের একজন করে তুলেছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত; তাঁর স্বামী বিবেকানন্দ একজন সেনা কর্মকর্তা। অঙ্কিতা শর্মার এই যাত্রা শুধু ইউপিএসসি প্রার্থীদেরই নয়, দেশের অসংখ্য যুবক-যুবতীর কাছে প্রতিদিন নতুন করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে (Success Story)।