বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এই মুহূর্তে রাজ্যের ‘জ্বলন্ত ইস্যু’গুলির মধ্যে অন্যতম হল সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। বিগত প্রায় চার মাস ধরে সংবাদের শিরোনামে রয়েছে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অধীন এই জায়গা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হয়ে রাজ্যে বিজেপির (BJP) একাধিক নেতা-নেত্রী এই ইস্যু নিয়ে সুর চড়িয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই জায়গা নিয়ে গেরুয়া শিবির ‘বিশেষ স্ট্র্যাটেজি’ও তৈরি করেছে বলে খবর।
নারী ভাতা নাকি নারী নির্যাতন? রাজ্যের মহিলাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য কোনটা? কার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন তাঁরা? ভোটের মুখে এটা যেন ‘মিলিয়ন ডলার কোয়েশ্চন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপির দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়ে সন্দেশখালিতে হওয়া নির্যাতন চাপা দেওয়া যাবে না। সন্দেশখালিকে সামনে রেখেই গেরুয়া শিবির বসিরহাটের (Basirhat) ‘লড়াই’য়ে নামতে চাইছে বলে অনুমান।
বসিরহাট লোকসভা আসনে রাজনৈতিক লড়াইয়ে পরাজিত হলেও সন্দেশখালিতে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া কেন্দ্রের শাসক দল। রাজ্যের একাধিক তাবড় তাবড় নেতা-নেত্রীকে ছেড়ে তাই সন্দেশখালির প্রতিবাদী গৃহবধূ রেখা পাত্রকে (Rekha Patra) বসিরহাট থেকে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির অন্দরের ফিসফাস, সন্দেশখালি হিঙ্গলগঞ্জ বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা আসনে জয়ী হওয়ার ‘প্ল্যান’ তৈরি করে ফেলেছেন ভোট কুশলীরা।
আরও পড়ুনঃ আমায় চোর বলা! ‘জিভ টেনে নিতে পারতাম! করিনি, কারণ…, এবার আসল ঘটনা ফাঁস করলেন মমতা
রাজ্যের দুর্নীতি থেকে শুরু করে আরও নানান বিষয়ে সুর চড়ানোর পাশাপাশি একমাত্র সন্দেশখালি এমন একটি ইস্যু যা নিয়ে ক্রমাগত তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে পদ্ম শিবির। মঙ্গলবার বালুঘাটের সভা থেকেই এই নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে একহাত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘দিল্লি দখলের লড়াই’য়ে যেমন সন্দেশখালির নারী নির্যাতনের ইস্যুকে বড় হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। তেমনই এখানে জিতে দক্ষিণবঙ্গে নিজেদের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করতে চাইছে তারা, মত ওয়াকিবহাল মহলের।
অন্যদিকে বিগত নির্বাচনগুলিতে রাজ্যের মহিলা ভোটারদের একটা বিরাট অংশ তৃণমূলের ঝুলি ভরিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে আবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বৃদ্ধি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্দেশখালিতে পদ্ম ফুটিয়ে বিজেপি প্রমাণ করতে চায়, প্রকল্পের ভাতা বৃদ্ধি করে কিচ্ছু হবে না! রাজ্যের মহিলারা নারী নির্যাতনের ইস্যুকেই বেশি গুরুত্ব দেয়।
তাছাড়া বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটও একটা বড় ফ্যাক্টর। সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক তৃণমূলের সঙ্গে থাকবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। সেই সঙ্গেই আবার নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছে আইএসএফ এবং বাম। এর ফলে লড়াইটা জমে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।
বসিরহাটের ‘লড়াই’য়ে শেষ অবধি কে জিতবেন তা জানা যাবে আগামী জুন মাসে। তবে নির্বাচনী প্রচারে কোনও খামতি রাখছেন না বিজেপি প্রার্থী তথা সন্দেশখালির প্রতিবাদী গৃহবধূ রেখা পাত্র। কখনও জলমুড়ি, কখনও আবার ভাজা লঙ্কা দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে প্রচারে বেরিয়ে পড়ছেন তিনি। বৈশাখের এই প্রখর রোদ মাথায় নিয়েই বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে প্রচার সারছেন পদ্ম প্রার্থী।