বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ তৈরির কথা সামনে আসার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ছিল। গত কয়েকমাসে একাধিক মন্তব্যে দলকে সমস্যায় ফেলেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সতর্ক করা হলেও তিনি নিজের অবস্থান বদলাননি। এই পরিস্থিতিতেই তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। আর সাসপেনশন ঘোষণা হতেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন হুমায়ুন। প্রশ্ন ওঠে শুধু বাবরি মসজিদ তৈরির জন্যই কি তাঁকে সাসপেন্ড করা হল? আর এই প্রশ্নের উত্তর এবার খোলসা করে জানালেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
কী জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)?
শুধুমাত্র বাবরি মসজিদ তৈরির জন্যই হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নেরই স্পষ্ট জবাব দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি দাবি করে বলেন, ঘটনা শুধু ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণের নয়, এর পিছনে রয়েছে বড় রাজনৈতিক খেলা।
কুণাল (Kunal Ghosh) বলেন, বাংলায় যে কোনও ব্যক্তি তাঁর জায়গায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা ধর্মীয় স্থাপনা তৈরি করতে পারেন। এর জন্য কাউকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা হয় না, ভবিষ্যতেও হবে না। কিন্তু যদি কোনও ব্যক্তি অন্য রাজনৈতিক দলের চক্রান্তে পা দিয়ে ধর্মের মোড়কে রাজনৈতিক ইভেন্ট তৈরি করেন, মেরুকরণ বাড়ান এবং দলবিরোধী কাজে যুক্ত হন, তখন বিষয়টি ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে সাংগঠনিক শৃঙ্খলার আওতায় আসে।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, যেমন ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের মতো ইভেন্ট হলে আমরা গীতা পাঠ নিয়ে আপত্তি করি না, আপত্তি থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইভেন্ট ব্যবহারের বিরুদ্ধে। তেমনই কেউ মসজিদ তৈরি করলে করতে পারেন। কিন্তু সেটা যদি রাজনৈতিক চক্রান্তে পরিণত হয়, উদ্দেশ্য বদলে যায়, তখন তা দলীয় নিয়মভঙ্গ হিসেবে দেখা হয়। তাই শুধুমাত্র মসজিদ তৈরি করার জন্য হুমায়ুনকে বহিষ্কার করা হয়েছে এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা বলে জানান কুণাল (Kunal Ghosh)।
এর আগে সাংবাদিকদের সামনে হুমায়ুনের সাসপেনশন ঘোষণা করতে গিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও একই সুরে কথা বলেন। তাঁর দাবি, ধর্মকে হাতিয়ার করে রাজনীতি করার সঙ্গে তৃণমূল কোনওদিন সম্পর্ক রাখে না। বেলডাঙায় হঠাৎ বাবরি মসজিদ তৈরির কথা কেন সামনে আনা হল, তারও ব্যাখ্যা চান তিনি। ফিরহাদের অভিযোগ, এর পিছনে বিজেপির প্ররোচনা রয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতি বার ভোটের আগে একেকজন গদ্দারকে ধরে এই কার্ডটা খেলে বিজেপি। এবার হুমায়ুন ভাইকে ধরেছে। এসআইআর করে লাভ না হওয়ায় এবার বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছে।”

আরও পড়ুনঃ শিলান্যাস শুরুর আগেই মমতার কড়া মন্তব্য, কী ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রী-র?
সব মিলিয়ে, তৃণমূলের বক্তব্য পরিষ্কার যে, বাবরি মসজিদ নয়, বরং সেই উদ্যোগকে রাজনৈতিক ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করে ভোটের আগে বিভাজনের পরিবেশ তৈরি করাই দলের কাছে বড় প্রশ্ন। কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও ফিরহাদ হাকিম দু’জনেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্ম নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই হুমায়ুনের বিরুদ্ধে দলের এই সিদ্ধান্ত।












