বাংলাহান্ট ডেস্ক: ইউনেস্কোর ‘ইন্ট্যানজিব্ল কালচারাল হেরিটেজ’-এর তকমা পেল ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় উৎসব দীপাবলি (Diwali)। নয়াদিল্লিতে ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া ইউনেস্কোর শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের (UNESCO) অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দীর্ঘ মনোনয়ন প্রক্রিয়া ও মূল্যায়নের পর ১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয় যে দীপাবলি এখন থেকে বিশ্বের অবিস্মরণীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এর ফলে দীপাবলির আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব নতুন মাত্রা পেল আন্তর্জাতিক স্তরে।
ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেল ভারতের দীপাবলি (Diwali):
সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, দীপাবলি (Diwali) প্রতি ভারতের মানুষের আবেগ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন এই উৎসবকে আরও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি এনে দিল। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্যও এটি গর্বের বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জানান, দীপাবলি অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণের প্রতীক—‘তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ’ মন্ত্রেরই বাস্তব রূপ। তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে এই স্বীকৃতি ভারতের সাংস্কৃতিক কূটনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।
আরও পড়ুন: শতাব্দী প্রাচীন গ্লেনারিজের বন্ধের ঘোষণা! বড়দিন-নববর্ষের আনন্দে ভাটা হতাশ পর্যটকেরা
অধিবেশনটি এবার প্রথমবার ভারতে আয়োজিত হওয়ায় তার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। সপ্তদশ শতকের মোগল যুগের ঐতিহ্যবাহী লালকেল্লার অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত এই ছয় দিনের আন্তর্জাতিক অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ১৮০টি দেশের হাজারের বেশি প্রতিনিধি। ইউনেস্কো কমিটির সদস্য, বিশেষজ্ঞ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন নানা আলোচনায়। অধিবেশনে বিশ্বব্যাপী ঐতিহ্য রক্ষার উপায়, তহবিল গঠন, আন্তর্জাতিক সহায়তা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ওপর আলোকপাত করা হয়।
People in India and around the world are thrilled.
For us, Deepavali is very closely linked to our culture and ethos. It is the soul of our civilisation. It personifies illumination and righteousness. The addition of Deepavali to the UNESCO Intangible Heritage List will… https://t.co/JxKEDsv8fT
— Narendra Modi (@narendramodi) December 10, 2025
দীপাবলি (Diwali) ভারতের পঞ্চম সাংস্কৃতিক উপাদান হিসেবে ইউনেস্কোর ‘ইন্ট্যানজিব্ল কালচারাল হেরিটেজ’ তালিকায় যুক্ত হল। এর আগে যোগ, দুর্গাপুজো, গরবা ও কুম্ভমেলা এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই স্বীকৃতি শুধু উৎসবের ঐতিহ্যই তুলে ধরবে না, বরং পর্যটন শিল্প, আন্তর্জাতিক গবেষণা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়েও নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। দীপাবলির আলো, উৎসবের রীতি, আধ্যাত্মিকতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা এখন আরও বিস্তৃত পরিসরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন:ট্রাডিশনাল টাচে নয়া স্বাদ, পাতা পোড়া মুরগি খেয়ে দেখেছেন; কীভাবে বানাবেন তার প্রণালী দেখে নিন
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেখাওয়াত জানান, ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশ্বের কাছে তুলে ধরার সুযোগ হিসেবে এই অধিবেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ইউনেস্কোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে এবং বিশ্বমঞ্চে দেশের প্রভাব বাড়বে। তাঁর মতে, এমন আন্তর্জাতিক সম্মেলন মৈত্রীর কূটনীতি জোরদার করে এবং ভবিষ্যতে আরও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার পথ খুলে দেয়। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দীপাবলি (Diwali) পরিচিতিকে আরও উজ্জ্বল করে তুলল এবং ভারতের সাংস্কৃতিক অস্তিত্বকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করল।












