একী কাণ্ড! মহিলা সাংবাদিককে চোখ মারলেন পাক সেনার মুখপাত্র, ভিডিও ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড়

Published on:

Published on:

Pakistan Army spokesman winks at female journalist.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) ফের তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রে দেশের সেনা জনসংযোগ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। একটি সাংবাদিক বৈঠকের মাঝেই এক মহিলা সাংবাদিককে প্রকাশ্যে চোখ টিপে ইঙ্গিত দেওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পরিসরে। ঘটনাটি ঘটে যখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিক আবসা কোম্যান। সেই প্রশ্নের উত্তরে চৌধুরীর কটূক্তি, হাসি এবং পরবর্তী চোখ মারা, ক্যামেরায় ধরা পড়তেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। নেটিজেনদের বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। অনেকেই লিখেছেন, এই ঘটনায় পাকিস্তানের গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থাই স্পষ্ট হয়ে গেছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মহিলা সাংবাদিক কে চোখ মারলেন পাক(Pakistan) সেনার ডিজি

সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই আবসা কোম্যান প্রশ্ন তুলেছিলেন—ইমরান খানকে কেন ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’, ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ বা ‘দিল্লির ইশারায় পরিচালিত’ বলা হচ্ছে। তিনি জানতে চান, আগে কখনও এমন অভিযোগ ওঠেনি এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না। উত্তরে চৌধুরীর মন্তব্য ছিল, “আরও একটি পয়েন্ট যোগ করুন, উনি এক জন মানসিক রোগী।” এরপরই তিনি হাসেন এবং ওই মহিলা সাংবাদিকের দিকে চোখ টিপে ইঙ্গিত দেন। তাঁর এই আচরণ অনেকের কাছে ‘অপেশাদার’, ‘অশ্রদ্ধাশীল’ এবং ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’-এর প্রতিচ্ছবি বলে মনে হয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই পাকিস্তানে (Pakistan) সেনাশাসনের ছায়া আরও ঘন হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেছেন বহু বিশ্লেষক।

আরও পড়ুন:দুর্গাপুজোর পর UNESCO-র ওয়ার্ল্ড কালচারাল হেরিটেজ লিস্টে এবার দীপাবলি! উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী

নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রতিক্রিয়ায় বহু মানুষ লিখেছেন, পাকিস্তানে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। কেউ লিখেছেন, “এটা স্বাভাবিক। পাকিস্তান (Pakistan) এখন একেবারে মিম মেটেরিয়াল।” সেনাবাহিনীর আধিপত্য ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ঘটনার পর শুক্রবার এক পৃথক বিবৃতিতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আবারও তীব্র আক্রমণ শানান চৌধুরী। নাম না করেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ‘নার্সিসিস্ট’ আখ্যা দেন এবং অভিযোগ করেন, ইমরান মনে করেন, “আমি ক্ষমতায় না থাকলে আর কিছুই থাকবে না।” তাঁর অভিযোগ, জেলে ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা কয়েক জনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিষ ছড়ানো’ হচ্ছে।

চৌধুরীর দাবি, ইমরান খান পাকিস্তানের (Pakistan) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন এবং সেনা ও জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন। তিনি বলেন, সাংবিধানিক অধিকার মানে সীমাহীন স্বাধীনতা নয়, বিশেষত যখন জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে আসে। পাশাপাশি আবারও ৯ মে, ২০২৩-এ সেনা স্থাপনাগুলির উপর হওয়া হামলার ‘পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে ইমরানকেই দায়ী করেন তিনি। যদিও ইমরান খান এবং তাঁর দল সব অভিযোগই বারবার অস্বীকার করেছেন, দাবি করেছেন এগুলি পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।

Pakistan Army spokesman winks at female journalist

আরও পড়ুন:স্বাধীন সিন্ধুদেশের দাবিতে শুরু বিক্ষোভ! করাচিতেই উঠল ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ স্লোগান, ছড়িয়ে পড়ল হিংসা

উল্লেখযোগ্য, সম্প্রতি কারাগার থেকেই এক্স-এ পোস্ট করে ইমরান খান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘মানসিকভাবে অস্থির ব্যক্তি’ বলে আক্রমণ করেন এবং পাকিস্তানে সংবিধান ও আইনশৃঙ্খলার ‘সম্পূর্ণ পতন’ ঘটেছে বলে দাবি করেন। এই প্রেক্ষাপটে চৌধুরীর চোখ টিপে ইঙ্গিত দেওয়ার ভিডিও নতুন করে বিতর্ককে উসকে দিয়েছে। পাকিস্তানের (Pakistan) রাজনৈতিক অস্থিরতা, সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং গণতন্ত্রের বাস্তব পরিসর নিয়ে ফের একবার বড় প্রশ্নচিহ্ন উঠছে।